রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পাকিস্তানকে ১ রানে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস ডেস্ক: মঞ্চ প্রস্তুত ছিল ভারত-পাকিস্তান মহারণের। থাইল্যান্ডকে হারিয়ে আগেই ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। সবার দৃষ্টি ছিল শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে। গত মাসে পুরুষদের এশিয়া কাপের মতো এবার নারীদের এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও বাধ সাধল শ্রীলঙ্কা। উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে ১ রানে জিতে ১৪ বছর পর ফাইনালে উঠলো লঙ্কান মেয়েরা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নারী এশিয়া কাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ৬ উইকেটে ১২২ রান করে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান ৬ উইকেটে করে ১২১। এতে ২০০৮ সালের পর প্রথমবার ফাইনালে গেল প্রথম চার আসরের রানার্সআপ শ্রীলঙ্কা। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৯ রান। প্রথম পাঁচ বলে ছয় রান নিয়ে সমীকরণ এক বলে ৩ রানে পরিণত করেন নিদা দার ও আলিয়া রাজ। শেষ বলে সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারলেন না তারা। দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন নিদা, ১ রানে জিতে গেলো শ্রীলঙ্কা।
স্লো ওভার রেটের কারণে শেষ ওভারে বৃত্তের বাইরে ছিল একজন কম ফিল্ডার। আচিনি কুলাসুরিয়ার করা ফুল টস ডেলিভারিটি অফসাইডে খালি থাকা সেই বাউন্ডারির দিকেই খেলেন নিদা। কিন্তু পুরোপুরি সংযোগ হয়নি ব্যাটে-বলে। ফলে ক্যাচ উঠে যায় এক্সট্রা কভারে। সেটি আবার হাতের মুঠোয় রাখতে পারেননি কাভিশা দিলহারি। ফলে দুই রান নিয়ে ম্যাচ টাই করার সুযোগ পেয়ে যায় পাকিস্তান।
সে সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি নিদা ও আলিয়া। দ্বিতীয় রান নেওয়ার প্রচেষ্টায় স্ট্রাইকিং প্রান্তে ফেরার আগেই কাভিশার থ্রো গ্লাভসে নিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেন আনুশকা সাঞ্জিভানি, নিশ্চিত হয় ১ রানের জয়। সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মাতে শ্রীলঙ্কা শিবির আর পাকিস্তান ডাগআউটে তখন রাজ্যের নীরবতা।
রান তাড়ায় বেশ ভালো শুরু করে পাকিস্তান। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান তুলে নেয় তারা। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুনিবা আলি ১০ বলে ১৮ রান করে আউট হন। আরেক ওপেনার সিদ্রা আমিন অবশ্য ৯ রান করতে খেলে ফেলেন ২০টি বল।
এরপর ইনিংস যত এগিয়েছে ততই পাকিস্তানিদের চেপে ধরেছে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ছন্দে থাকা অলরাউন্ডার নিদা দার। ইনিংসের ১৮তম ওভারে ৪১ বলে ৪২ রান করে সাজঘরে ফেরেন বিসমাহ।
তখনও ম্যাচের পাল্লা ছিল পাকিস্তানের দিকেই, ১৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। কিন্তু ১৮তম ওভারে সুগন্ধিকা কুমারি ৫ রানে ১টি ও ১৯তম ওভারে ইনোকা রানাবিরা ৪ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। শেষ ওভারে ৯ রান ডিফেন্ড করার দায়িত্ব বর্তায় আচিনির কাঁধে। যা দারুণভাবেই করেন তিনি। শেষ বলে রানআউট হওয়া নিদা খেলেছেন ২৬ বলে ২৬ রানের ইনিংস।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৪ ওভারে এক মেইডেনসহ ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন ইনোকা। তার হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। এছাড়া কাভিশা ও সুগন্ধিকার শিকার ১টি করে উইকেট। নারী এশিয়া কাপের প্রথম চার আসরের রানার্সআপ শ্রীলঙ্কাকে ১২২ রানে পৌঁছে দেওয়ার পথে হার্শিথা সামারাবিক্রমের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৩৫ রান। এছাড়া আনুশকা ২৬, নিলক্ষ্মী ডি সিলভা ১৪ ও হাসিনি পেরেরা করেন ১৩ রান।
২০০৪ সালে নারী এশিয়া কাপ শুরুর পর প্রথম চার আসরেই ফাইনাল খেলেছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। চারবারই শিরোপা জেতে ভারত। পঞ্চমবারের মতো শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। শ্রেষ্ঠত্বের নির্ধারণী ম্যাচটি হবে শনিবার, দুপুর দেড়টায়।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২ | সময়: ৫:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ