প্রতিপক্ষের ভয়ে ২০ দিন ধরে বাড়িছাড়া একটি পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় একটি পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। ২০ দিন আগে উপজেলার বামকৃষ্ণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে পরিবারটি পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। প্রতিপক্ষের লোকজনের ভয়ে পরিবারটি এখনও বাড়ি ফিরতে পারেনি।
বুধবার রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেছেন বামকৃষ্ণ গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী ও তাঁর মেয়ে আয়েশা খাতুন। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা এর প্রতিকার চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুটি বাগানের জমি নিয়ে আকবর আলীর সঙ্গে একই গ্রামের নায়েব উদ্দীন, শাহীন ও আনোয়ার হোসেন দলিলসহ কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধ চলছে। ১৪ শতক ও ২৩ শতক পরিমাণের এই জমি আকবর আলীর নামেই ছিল। তিনি তাঁর জামাতা বোরহান উদ্দীনকে কিছু জমি দিয়েছেন। এসব জমি তাদের ভোগদখলেই আছে। তাঁরা পরিশোধ করেছেন খাজনাও। কিন্তু প্রতিপক্ষরা এই জমি এখন তাদের দাবি করছেন। এই বাগান দুটি দখলে নিতে সেগুলোকে প্রতিপক্ষরা মসজিদের জমি ও কবরস্থান বলে প্রচার করছেন।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও (ইউএনও) অবহিত করা হয়েছে। এরমধ্যেই গত ২২ জুলাই বাগান দুটি দখলে নিতে প্রতিপক্ষরা আকবর আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। তারা বাড়ির দরজা-জানালাসহ আসবাবপত্র ভেঙে ফেলেন। চাপাতি দিয়ে আয়েশার স্বামী বোরহান উদ্দীনকে কোপানো হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বোরহানের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২২ জুলাই হামলার পর পরিবারটিকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই হামলার ঘটনায় আয়েশা খাতুন থানায় মামলাও করেছেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। কিন্তু প্রতিপক্ষরা এখনও হুমকি দিচ্ছেন। প্রাণভয়ে ২২ জুলাই থেকেই তাঁরা পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা প্রাণ নিয়ে সংশয়ে আছেন। এখন তাদের নিজ গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও সংবাদ সম্মেলনে পরিবারটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন দলিল বলেন, জমিটা গ্রামের লোকজন মসজিদের নামে করেছে। সেখানে একটা ঈদগাহ করা হচ্ছিল। এতে লোকজন নিয়ে আকবর বাঁধা দিতে এলে গণ্ডগোল হয়েছে। কিন্তু ভয়ে তারা বাড়িতে থাকতে পারছে না এটা ঠিক না।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধেই গ্রামের গোটা মানুষ আকবরের পরিবারের বিপক্ষে। কিন্তু আইন আবার এই পরিবারের পক্ষে। পরিবারটিকে আমি বলেছি, আপনারা বাড়িতে আসেন। আমি বাড়িতে তুলে দিয়ে আসব। কে বাঁধা দেয় দেখব। কিন্তু তারা তো আসেনি। তাঁরা আমার কাছে এলে আমি নিজে গিয়ে তাদের বাড়িতে দিয়ে আসব।’


প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ | সময়: ৬:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ