রাবির তিন শিক্ষার্থীকে বহিরাগতের মারধর

রাবি প্রতিনিধিঃ
ক্যাম্পাসের ভেতর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বহিরাগতরা। গত সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মাঠের সামনে পুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়। মারধর করে পালানোর সময় ঘটনা স্থলে থেকে এক বহিরাগতকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডি। পরে গভীর রাতে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- মাসুম পারভেজ শান্ত, রাকিবুল হাসান সৌরভ, হাসিবুল হাসান শুভ। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে হাসিবুলের পায়ের গোড়ালিতে জখম হয়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আটক মো. রফিকুল ইসলাম আলী নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডাশমারী স্কুল মোড়ের বাসিন্দা রুস্তম আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকাল পাঁচটার দিকে বহিরাগত এক ছেলে একটি মেয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় শেখ রাসেল মাঠের সামনে পুকুরপাড়ে বসে ছিলেন। তাদেরকে এ অবস্থায় দেখে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ ও তার বন্ধুরা তাদের বাঁধা দেয় এবং চলে যেতে বলে। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং বহিরাগত ওই ছেলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল মন্তব্য করে। পরে তারা প্রক্টরকে খবর দিলে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ এসে বহিরাগতদের চলে যেতে বলে।

প্রক্টর ও পুলিশ চলে যাবার পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে ছয়-সাতজন বহিরাগত এসে বাঁধাপ্রদানকারী শিক্ষার্থী এবং তার বন্ধুদের মারধর শুরু করে। এতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম পারভেজ শান্ত, রাকিবুল হাসান সৌরভ এবং হাসিবুল হাসান শুভ আহত হয়। পরে আশেপাশে থাকা লোকজন এবং পুলিশ আসলে বহিরাগতরা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় রফিকুল ইসলামকে আটক করে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয় ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্ররা। প্রক্টরিয়াল বডি দীর্ঘক্ষণ আটক রাখার পর পুলিশে সোপর্দ করার সময় প্রশাসনের সামনেই সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা তাকে বেরধরক মারধর করে। পরে পুলিশ তাকে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন।

ঐ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান শুভ বলেন, তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ভালোভাবে বসতে বলি। এসময় ওই ছেলে আমাকে বলে ‘ক্যাম্পাস কি তোর বাপের নাকি? আমরা এভাবে বসে থাকলে তোর সমস্যা কোথায়?’ পরে প্রক্টরিয়াল বডি এসে ঘটনার মীমাংসা করে দিলে ওরা চলে যান। কিছুক্ষণ পর ছয়জন ছেলে এসে আমাদের মারতে শুরু করেন। আমি এবং শান্তকে মেরে সাইকেলের উপর ফেলে দেন তারা। তখন সাইকেলে পরে আমার পা কেটে যায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ঘটনার শুরুর দিকে শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। আমরা অভিযোগ পত্রটি থানায় পাঠিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে যেন বেশি ঝামেলা না হয় সেজন্য আমরা বিষয়টিকে মীমাংসা করেছি। পরে আটক রফিকুলের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ছেলেটিকে আমাদের হাতে তুলে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলে তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে তাকে হস্তান্তর করেছি।

 

সানশাইন/তৈয়ব


প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০২২ | সময়: ৯:১২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine