জামিলের হত্যাকারী এখন জামায়াতের আমির, প্রশাসন কী করে- প্রশ্ন বাদশার

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, শহিদ জামিল আকতার রতনকে সবার আগে যে ব্যক্তি ছুড়িকাঘাত করেছিল তার নাম ডা. কেরামত আলী। তৎকালীন ছাত্র শিবিরের সভাপতি এই কেরামতের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। জামিলকে হত্যকারী এই ক্যাডার এখন রাজশাহী জামায়াদের আমির। কী করে হয়? আমাদের দেশের পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার- তারাই বা কী করে? আজকে আমাদের হতবাক হয়ে যেতে হয়!
মঙ্গলবার সকালে ঘাতক জামায়াত-শিবিরের হাতে নির্মমভাবে নিহত ডা. শহিদ জামিল আকতার রতনের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে শহিদ জামিল ব্রিগেড এই সমাবেশের আয়োজন করে।
এর আগে শহিদ জামিলের সমাধিতে রাজশাহী জেলা ও মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি, যুবমৈত্রী, ছাত্রমৈত্রী, নারী মুক্তি সংসদ, জামিল ফাউন্ডেশন, জামিল স্মৃতি সংসদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
পরে সমাবেশে ঘাতক ক্যাডার কেরামত আলীকে গ্রেফতার করতে না পারলে রাজশাহীতে পুলিশের আর কোন প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে এমপি বাদশা বলেন, জামিলের হত্যাকারী কেরামত আলী রাজশাহী জামায়াদের আমির হয়ে থাকবে আর পুলিশও থাকবে এটি হতে পারে না। আপনারা বলেন, আমরা ব্যর্থ হলাম, আমরা পারলাম না। আমরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে কেরামত আলীকে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে আপনাদের সামনে হাজির করে দিবো। তারা রাতে কোথায় ঘুমায়, কার সঙ্গে আড্ডা দেয়া, কার সঙ্গে বসে ষড়যন্ত্র করে আমরা সবই জানি। আমি যে তথ্য দিলাম, সেটি তদন্ত করে দেখতে পারেন।
রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরও বলেন, বাংলাদেশ কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না। তবে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোর চক্রান্ত চলছে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করি তাদেরকেই সেই চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। কিন্তু আমরা কী তা নিয়ে ভাবি? ভাবি না। রাজশাহীতে এখন মূল ব্যবসায়ীরা জামায়াত ইসলামের লোক। আমি তাদের নাম বলতে পারবো, কিন্তু বলতে চাই না। পুলিশ সেটি জানে, গোয়েন্দা বিভাগও জানে।
শহিদ জামিলকে নতুন লড়াইয়ের অঙ্গিকার উল্লেখ করে বাদশা বলেন, জামিলের কবরের পাশে যদি আমাদের জন্য আরেকটি কবরও খুঁড়ে রাখা হয় তাতেও আমরা বিচলিত নই। তারে রেখে যাওয়া লড়াই আমরা চালিয়ে যাবোই। জামিল একটি চেতনা। জামিল একটি সাহস। জামিল একটি নতুন লড়াইয়ের অঙ্গিকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করেন তারা ঐক্যবদ্ধ হন। জামায়াতের সঙ্গে বসে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদের প্রতিহত করতে হবে। জামিলের হত্যাকারীরা রাজশাহীতে প্রকাশ্যে জামায়াত করবে, রাস্তায় মিছিল করবে এটি আমরা হতে দিতে পারি না। হতে দেওয়া হবেও না।
শহিদ জামিল ব্রিগেডের উপদেষ্টা ও জামিল ফাউন্ডেশনের সভাপতি কবি আরিফুল হক কুমারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক কামারুল্লাহ সরকার, শহিদ জামিল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন প্রমুখ। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও শহিদ জামিল ব্রিগেডের প্রধান সমন্বয়ক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২২ | সময়: ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ