রাবি ছাত্রদলের কমিটি আছে, কর্মকান্ড নেই!

লাবু হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ঝিমিয়ে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের ঘুম ভাঙে দীর্ঘ সাত বছর পর। ২০১৪ সালের পরে গত বছরের ১৭ জুন তাদের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তবে দুই বছর মেয়াদের কমিটি থাকলেও ক্যাম্পাস রাজনীতির মাঠে বর্তমানে সংগঠনটি প্রায় নিষ্ক্রিয়। জাতীয় দিবস পালন আর ক্যাম্পাসের বাইরে ঝটিকা মিছিল ব্যতিত দৃশ্যমান কোনো কর্মকান্ড তো নেই-ই আর বলতে গেলে ক্যাম্পাসে অস্তিত্ব সংকটে এই ছাত্রসংগঠনটি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘গত কয়েক বছর যাবত ক্যাম্পাসে চোখে পরার মতো ছাত্রদলের শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কর্মকান্ড নেই। রাবিতে ছাত্রদলের আদৌ কমিটি আছে কি! থাকলেও সেটা নামমাত্র কমিটি।’
জানতে চাইলে স্বজন রায় নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাবিতে ছাত্রদলের আদৌ কমিটি আছে কি! থাকলেও সেটা নামমাত্র কমিটি। কারণ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কর্মসূচিতে তো তাদের চোখে পরে না। একবারই তাদের ক্যাম্পাসের বাইরে শাবিপ্রবির ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখেছি।’
মায়িশা ফারজানা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি আছে কিনা এখন পর্যন্ত জানিনা। জানবই বা কি করে! ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোনো আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ত হতে দেখিনি।’
এদিকে ছাত্রদলের নেতাকর্র্র্মীরা বলছেন, ‘কেন্দ্র ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচিই তারা দলীয় ব্যানারে পালন করে আসছেন। তবে প্রশাসনের অসহযোগিতার ফলে ক্যাম্পাসে তারা একসঙ্গে চা পর্যন্তও খেতে পারে না।’
জানতে চাইলে রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘কেন্দ্র ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচিই আমরা পালন করে আসছি। এবারে ভর্তি পরীক্ষায় তিন দিনব্যাপী আমরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছি। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে হিমেলের মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও অনেক কিছু করতে পারতাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কর্মকান্ডে অসহযোগিতা করে।’
ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুদ্দিন চৌধুরী সানিন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে আমাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অনুমতি দেয় না। ক্যাম্পাসে আমাদের বিন্দুমাত্র সহাবস্থান নেই। এমনকি আমাদের বসার মতো নিজস্ব টেন্টও নেই। আমরা ক্যাম্পাসের কোথাও বসে একসঙ্গে চা পযন্ত খেতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের সহযোগিতা করত তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালোকিছু করতে পারতাম।’
বর্তমান প্রশাসনের আমলে কোনো সংগঠনকে তাদের কার্যক্রমে বাঁধা প্রদাণ করা হয়নি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে কাউকে কর্মসূচি পালন করতে বাঁধা প্রদান করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে পড়াশোনা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে এটা আসলে স¦াভাবিক প্রক্রিয়া। আমরা কোনো কর্মকান্ডে তখনি নিষেধ করি যখন ক্যাম্পাসে অশান্তি কিংবা ছাত্রদের নিরাপত্তাহীনতার মতো ঘটনা ঘটে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২ | সময়: ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর