সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: টানা ৩২ ঘণ্টা পর নিভল গাজী টায়ার কারখানার আগুন। আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
তবে আগুন নিভলেও কারখানার ভেতরে অভিযান চালানোর মতো অবস্থা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ভবনের ভেতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় ভেতরে অনেক জায়গায় এখনও জ্বলছে আগুন
ফায়ার সার্ভিস বলছে- কারখানার ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ধসে যেতে পারে। পোড়া ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে।
সোয়েব হোসেন নামে একজন বলেন, তার ভাইয়ের নাম সাত্তার হোসেন। তিনি কারখানায় ছিলেন। গত রোববার রাত পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন খোলা ছিল। এরপর থেকে ফোন বন্ধ। তবে নিখোঁজদের কয়েকজন স্বজন কারখানার সামনে রয়েছেন।
কারখানাটিতে যারা কাজ করতেন তাদের কেউ কেউ এসেছেন দেখতে। তবে মালিক পক্ষের বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি।
এদিকে গাজী টায়ার কারখানায় আগুন নেভানো জায়গা গুলো থেকে ভারী মালামাল লুট হয়েছে। সোমবার রাতে কারখানার দামি মেশিন-সহ জিনিসপত্র খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ভোরেও পোড়া জিনিসপত্র নিয়ে যায় শতাধিক লোকজন।
যৌথবাহিনী খবর পেয়ে তাদের কারখানা থেকে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে যৌথবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কারখানা। সেখানে সেনা সদস্য, বিজিবি ও পুলিশ রয়েছে। কারখানায় আগুন নেভানোর সময়েও লুটপাট করা হয়েছে। লুটপাট ঠেকাতে বিজিবি সদস্যরা কারখানার ভেতরে যান।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টায় ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পানি ছিটাতে দেখা গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ পর ভবনের বিভিন্ন তলায় পানি ছিটিয়ে দেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক সমকালকে জানান, ৬ তলা ভবনের ছাদে উঠেছিলাম সেখানে হতাহত কাউকে পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মীরা বলেন, পুরো কারখানা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ৫ ও ৬ তলা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারখানার ৪, ৫ ও ৬ তলা ধসে যেতে পারে যেকোনো সময়।তারা জানান, পোড়া ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তারা ও ছাদের ঢালাই খুলে পড়ছে।
সকালে ঘটনাস্থলে সিআইডির একটি তদন্ত টিমকে দেখা গেছে। তবে ঝুঁকির কারণে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি ফায়ার সার্ভিস। সেখানে প্রচণ্ড গরমের কারণে তারা ভবনের বাইরে থেকে চারপাশ পরিদর্শন করেছেন।
গত রোববার রাত ৮টার দিকে রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নি-কাণ্ডের পর আশ-পাশের ১৭৫ জনের খোঁজ মিলছে না। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। সবার মনেই তাদের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয়। সোমবার সন্ধ্যা ৭ টায় টায়ার কারখানার ছয়তলা একটি ভবন থেকে আগুনের কুণ্ডলী বের হতে দেখা যায়। আগুনের ভয়াবহতা ও স্বজনের খোঁজ না পাওয়া আহাজারির মধ্যেই অনেকই দেখা যায় কারখানার ভেতর থেকে সরঞ্জাম লুটপাট করতে। রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও কারখানার পোড়া ধ্বংসস্তূপের ভেতরে খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সানশাইন/ আর এক্স