কারাগারে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে থাকছে মাদক মামলার ৫ হাজার আসামি

সানশাইন ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি কারাগারে মাদক মামলায় বন্দি আছে চার হাজার ৯২৪ জন। তবে কারাগারগুলোতে মোট বন্দির সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৮৭ জন। কারাগার সূত্র জানায়, কারাগারে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে থাকছে মাদক মামলার বন্দিরাও। এতে মাদক মামলার আসামিরা সাধারণ বন্দিদের মাদক ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি কারাগারে মোট বন্দির সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ৭২৭ জন এবং নারী ৬৬০ জন। তাদের মধ্যে মাদক মামলায় আসামি হিসেবে বন্দি আছে চার হাজার ৯২৪ জন। এর মধ্যে রয়েছে হাজতি পুরুষ তিন হাজার ৯৮১ জন এবং নারী ১৮২ জন। পুরুষ কয়েদি আছে ৭৩৭ জন এবং নারী ২৪ জন।
এদিকে, কারাগারগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দির সংখ্যা পাঁচ হাজার ৩১৯ জন। এর মধ্যে মাদক মামলায় আসামি এক হাজার ৬৯২ জন। কুমিল্লা কারাগারে দুই হাজার ৫৯ জন বন্দির মধ্যে ৮৭৮ জনই মাদক মামলার আসামি।
অপরদিকে, কক্সবাজার কারাগারে তিন হাজার ২২৭ জন বন্দির মধ্যে এক হাজার ১১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে এক হাজার ৩২৭ জনের মধ্যে ৩৪১ জন, নোয়াখালী কারাগারে ৯৩৩ জনের মধ্যে ২৫৪ জন, চাঁদপুর কারাগারে ৬৮৬ জনের মধ্যে ২১৫ জন, ফেনী কারাগারে ৫০৩ জনের মধ্যে ২২৭ জন, লক্ষ্মীপুর কারাগারে ৫৪৩ জনের মধ্যে ৯১ জন, রাঙ্গামাটি কারাগারে ৩০৬ জনের মধ্যে ৬৫ জন, বান্দরবান কারাগারে ২৮৬ জনের মধ্যে ৮০ জন এবং খাগড়াছড়ি কারাগারে ১৯৮ জন বন্দির মধ্যে ৭২ জন মাদক মামলার আসামি।
চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) মো. আলতাব হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের কারাগারগুলোতে মোট বন্দির প্রায় ৪০ শতাংশই মাদক মামলার আসামি। আমরা যথাসাধ্য মাদক মামলার বন্দিদের সাধারণ বন্দি থেকে আলাদা রাখার চেষ্টা করি।’ চট্টগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীর খন্দকার বলেন, ‘মাদকবিরোধী অভিযান বেড়েছে। এক সঙ্গে র‌্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন সংস্থা এ অভিযান পরিচালনা করছে। প্রতিদিনই মাদকসহ অনেকে ধরা পড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইয়াবার দাম অনেক কমেছে। সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে দাম কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।’ বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘আদালতে মাদকের মামলা বাড়ছে। যেহারে মামলা বাড়ছে সেভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না। কারাগারে মাদক মামলার আসামিরা থাকছে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে। যে কারণে সাধারণ বন্দিরাও মাদক মামলার আসামিদের সঙ্গে মিশে এ সর্বনাশা পেশায় যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারাগারে মাদক মামলার আসামিদের পৃথকভাবে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদক নিয়ে যারা গ্রেফতার হয় তাদের বেশির ভাগই বহনকারী। তারা টাকার বিনিময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মাদক বহন করে দিয়ে আসে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বহনকারীদের গ্রেফতার করেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিচ্ছে। এ জন্য আড়ালে থেকে যাচ্ছে প্রকৃত গডফাদাররা। একজন ক্যারিয়ার বা বহনকারী গ্রেফতার হলে অন্যজনকে এ কাজে ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। যে কারণে সর্বনাশা মাদক ব্যবসা কমছে না।’


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩ | সময়: ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ