পানিতে চুবিয়ে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল : চারঘাটে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, চারঘাট: রাজশাহীর চারঘাটে পানিতে চুবিয়ে দুই যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার মোহন আলীর মা নারী গ্রাম্য পুলিশ নাসিমা খাতুন বাদী হয়ে সোমবার দিনগত রাতে চারঘাট মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শলুয়া ইউরিয়ন ছাত্রলীরে সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ শুভকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুলাই দৌলতপুর গ্রামের মানিক আলীর বাড়ি থেকে গরু বিক্রি করা ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা চুরি হয়। নির্যাতনের শিকার মোহন ও মছু টাকা চুরি করেছে এমন সন্দেহ করে মানিক টাকা উদ্ধারের জন্য মাদক কারবারি মুক্তার, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ শুভ, ছাত্রলীগ নেতা মিজানসহ তাদের সহযোগীদের দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা গত ৯ জুলাই সকালে মোহনকে এবং মছুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় তারা।
এরপর টাকা চুরি করেছে স্বীকার করাতে হাত-পা বেঁধে ডোবার পানিতে চুবিয়ে রেখে ও মাটিতে পুঁতে সারাদিন নির্যাতন করা হয়। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানোর চেষ্টা করলে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর গত ১৮ আগস্ট জনৈক পলক নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি থেকে মোহন ও মুছাকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
এরপর বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় একাধিক বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে চারঘাটে সর্বমহলে তোলপাড় সষ্টি হয়। একপর্যায়ে ঘটনার দেড়মাস পরে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মোহনের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দল ওয়াদুদ শুভ ও মাদক সম্রাট মুক্তার হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার দেড়মাস পর মামলার বিষয়ে বাদী নাসিমা খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনার এতদিন পরও তার শরীর অকেজো হয়ে আছে। ঘটনার সময় মামলার করার সাহস পাইনি। প্রশাসন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এজন্য দেরিতে হলেও মামলা দায়ের করেছি। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে রাজশাহীর চারঘাট সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করতে রাজি হয়নি। পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের অনুরোধ জানানোর পর সোমবার থানায় এসে এজাহার দায়ের করলে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের আটকে অভিযান চলমান আছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ