পরীক্ষার সাত মাসেও হয়নি ফল : সেশনজটের আশঙ্কায় রাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা

রাবি প্রতিনিধি: অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও সাত মাসেও ফল পায়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এতে সেশনজটে পরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের বিভাগে এমনিতেই কিছুটা জট আছে, আর এভাবে ফল প্রকাশে দেরি করলে আমরা আরও বড় সেশনজটে পড়তে পারি। এছাড়া সময়মতো ফল প্রকাশ না করলে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশেও আমাদের দীর্ঘসূত্রিতা বাড়বে।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি। সর্বশেষ ভাইভা হয় ১ ও ২ ফেব্রুয়ারিতে। তবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাত মাস কেটে গেলেও এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গত বছরের নভেম্বরে। তবে দুই দফা পিছিয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ডিসেম্বরে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও আমাদের ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। গত দুই মাস ধরে আমরা স্যারের কাছে ফলাফল প্রকাশের তারিখ জানতে চা”িছ। প্রতিবারই তিনি বলেন ‘আগামী সপ্তাহে দিব’। কিš‘ সেই আগামী সপ্তাহ আমাদের আর আসছে না।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ফল প্রকাশ না করে যাদের যে কোর্সে ইম্প্রুভমেন্ট আছে রোলসহ সেটি জানিয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে মৌখিকভাবে একটা ফলাফল সবাইকে বলেছেন তবে এখন পর্যন্ত অফিশিয়ালি ফল প্রকাশ করা হয়নি। এমনিতেই আমাদের বিভাগে সেশনজট আছে, রেজাল্ট প্রকাশ করতে এভাবে দেরি হলে আরও জটিলতার মধ্যে পড়তে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার আট মাস পর ফলাফল প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ১১৮ শিক্ষার্থী ১৬তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। সঠিক সময়ে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় তারা এই নিয়োগ পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়।
ফল প্রকাশে দেরির বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. জুলফিকার আহম্মদ বলেন, আমাদের ৭টি রেগুলার কোর্সের পাশাপাশি একটি রিসার্চের কোর্স রয়েছে। সে কোর্সে বিভাগের ২৩ জন শিক্ষকের অধীনে ভাগাভাগি হয়ে শিক্ষার্থীরা থাকেন। সে কোর্সে প্রথম পরীক্ষক ২৩ জন থাকেন আবার দ্বিতীয় পরীক্ষকও সমপরিমাণ থাকেন। এদিকে রেগুলার ৭ টি কোর্সে প্রথম দ্বিতীয়সহ ১৪ জন পরীক্ষক থাকেন। যাদের অনেকে নম্বর জমা দিতে করায় ফল প্রকাশে বিলম্ব হ”েছ। সর্বশেষ গত সপ্তাহেও আমাকে একজন নম্বর জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, পরীক্ষার কিছু খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছেও গেছিল। এছাড়া পরীক্ষা কমিটির একজন ট্যাবুলেটর হিসেবে শুরতে থাকার পর পরবর্তীতে তিনি থাকবেন না বলে জানান। ফলে ট্যাবুলেটরও পরিবর্তন করতে হয়েছে। এজন্য সবমিলিয়ে ফল প্রকাশে বিলম্ব হ”েছ। আমরা ইতোমধ্যে ট্যাবুলেশনের কাজ শুরু করেছি৷ কাল পরশু হয়ত রেজাল্ট দিয়ে দিব। আর ফল প্রকাশের সঙ্গে সেশনজটের কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের অলরেডি দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস চলছে। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষাও হবে।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৩ | সময়: ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ