বাঘায় আটক হলো জাল সনদের হোতা

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: ঢাকা ডিবি পুলিশের হাতে জাল সার্টিফিকেট তৈরী মামলায় আটক হওয়া চার সদস্যের মধ্যে একজনের নাম বুলবুল আহাম্মেদ ওরুপে বিপ্লব। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তেপুকুরিয়া গ্রামে। তিনি একটা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। দারিদ্রতার মধ্যে লেখা-পড়া শিখে বড় হয়েছেন । তবে বর্তমানে তার রয়েছে অঢেল সম্পদ। এলাকার লোকজন তার এ সকল সম্পদের উৎস জানতে চাইলে তিনি অহংকার করে বলতেন, “আমি আলাদিনের চ্যারাগ পেয়েছি, ঘোষলেই টাকা বের হয়’। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঢাকার রামপুরা এলাকার একটি বাসায় ডিবি পুলিশের হাতে জাল সার্টিফিকেট তৈরীর সরঞ্জাম-সহ আটক হওয়ার পর তার ‘চ্যারাগের’ রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, টিউশানী করে লেখাপড়া শেষ করার পর বিপ্লবের জীবন শুরু হয় দারুল এহসান ভিক্টরী পার্ক ঢাকা শাখায় একজন চাকরি জিবি হিসাবে। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয় সহ দু’টি প্রতিষ্ঠানেরই পরিচালক নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তিনি সার্টিফিকেট জালিয়াতি ব্যবসা শুরু করেন। তার মাধ্যমে কেবল বাঘা উপজেলায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যাক্তি জাল সনদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে চাকুরিজীবির সংখ্যা সব চেয়ে বেশি।
ঢাকা ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দির্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট জাল করে একটি চক্র লক্ষ-লক্ষ টাকার ব্যবসা করে আসছিল। তারা এতটায় কৌশলী ছিলো যে, এ সকল সনদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জরী কমিশনের ওয়েব সাইডে দেখার ব্যবস্থা ছিলো। এর ফলে হাজার-হাজার মানুষ তাদের উপর আস্থা রাখে এবং জাল সদন কিনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেওয়া শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে বুলবুল আহাম্মেদ ওরুপে বিপ্লবের এক ঘনিষ্টজন জানান, বিপ্লব বর্তমানে রাজশাহী শহরে জমি কিনে বাড়ী করা-সহ নিজ এলাকার পাশ্ববর্তী আমোদপুর বাজারের একটি মার্কেট এবং প্রায় ৮-১০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। এ ছাড়াও তাঁর রয়েছে একটি দামি প্রাইভেট কার।
বিপ্লব সম্পর্কে নওগার ইমদাদ হোসেন নামে জনৈক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, কয়েক বছর পূর্বে তার এক আত্নীয় রবিউর ইসলামকে চাকরি দেয়ার নামে একটি চেকের মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ টাকায় নেন বিপ্লব। পরবর্তীতে তিনি চাকরি দিতে না পারলে এ বিষয়ে আদালতে একটি চেক জালিয়াতি মামলা করেন রবিউল ইসলাম। এ মামলাটি অদ্যবধি চলমান রয়েছে।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে ঢাকার পত্রিকা এবং টেলিভিশনে খবর দেখে বাঘার বিপ্লব এর বিষয়ে অবগত হয়েছি। তবে এ সংক্রান্তে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন নথিপত্র আসেনি।


প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৩ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ