কিশোর-কিশোরীর বিয়ে আদালতে মিলছে না সত্যাতা

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) বাড়িতে অনশনে বসেছিল সাদিয়া আকতার নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। কিন্তু অনশনের দুইদিন পর গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ওই দুই শিক্ষার্থীর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে বাড়িতে বা থানা-পুলিশের সহায়তায় প্রকাশ্যে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়নি। রহস্যজনক কারণে আদালতে নিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করছেন পাত্র পরিবার ও স্থানীয় মাতবর প্রধানরা। এ বিয়েতে ছিলেন না অনশন করা ছাত্রীর পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মিরাট ইউপির আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে আদালতে কোন আইনজীবির মাধ্যমে এই বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করা হয়েছে তার নাম পরিচয় জানাচ্ছেন না পাত্র পরিবার কিংবা মাতবররা। এ কারণে কিশোর-কিশোরীর এই বিয়ে নিয়ে মাতবরদের বকএব্যর সত্যাসত্য নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
জানা যায়, উপজেলার আতাইকুলা মধ্যপাড়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া ছেলে আব্দুল্লাহর (২০) সঙ্গে একই গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে আতাইকুলা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারের (১৫) ফেসবুকের মাধ্যমে ৬ মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
সম্পর্কের এই জের ধরে মঙ্গলবার সাদিয়া বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন। বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানলেও মেয়েকে নিয়ে যেতে তারা অস্বীকার করেন।
ঘটনার দুইদিনেও পরিবারের লোকজন মেয়েকে নিতে না আসলে ছেলের পরিবার গ্রামের কতিপয় মাতব্বরদের পরামর্শে বৃহস্পতিবার নওগাঁ আদালতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করছেন পাত্রপক্ষ।
শিক্ষার্থী সাদিয়া জানান, আব্দুল্লাহকে তিনি ভালোবাসে। কিন্তু আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বিয়ে পরিবার মেনে নিবে না জানতে পেরে তিনি ছেলের বাড়িতে চলে আসেন। তিনি বিয়ে করতে চান। কিন্তু তার বিয়ে করার বয়স হয়নি তাহলে কীভাবে এ বিয়ে সম্পন্ন হবে, এমন প্রশ্নের কোন উত্তরে নিরুত্তর থাকেন শিক্ষার্থী সাদিয়াও।
ছেলের মা জেসমিন বলেন, মেয়ের পরিবারকে মেয়েকে বুঝিয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা মেয়েকে নিতে অস্বীকার করেন। তখন উপায় না পেয়ে গ্রামের মাতব্বরদের পরামর্শে আদালতের মাধ্যমে কোর্টম্যারেজ করা হয়েছে। কিন্তু তিনিও উত্তর দিচ্ছেন না বিয়ের বয়স হওয়া একটি মেয়ের বিয়ে আদালতে সম্পন্ন হলো।
আতাইকুলা গ্রামের মাতব্বর হামিদুল বলেন, ছেলের পরিবারের দাবির ভিত্তিতে সমস্যাটি আমরা গ্রামে বসেই সমাধান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মেয়ের পরিবারের আগ্রহ না থাকায় সমাধান করা যায়নি। তাই ছেলের পরিবারকে আদালতের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনিও মুখ খুলছেন না আদালতে এ বিয়ের সত্যাসত্য নিয়ে।
রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগ পেলে তারা ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। অভিযোগ পাননি বলে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে জানান ওসি।


প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৩ | সময়: ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ