টানেল যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ

সানশাইন ডেস্ক: নদীর তলদেশে টানেল। এটি এক সময় ছিলো স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সব ঠিক থাকলে আজ শনিবার টানেল যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে’র দুটি টিউবের মধ্যে প্রথম একটি টিউবের উদ্বোধন করা হবে। সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে টানেলের প্রথম টিউবটি উদ্বোধন করবেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সফলভাবে স্থাপন শেষে টানেলের দুটি টিউবের মধ্যে শনিবার প্রথম টিউবটি উদ্বোধন হবে। এ উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে টিউব উদ্বোধন করবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আগামী মাসের (ডিসেম্বর) মধ্যেই প্রথম টানেল যান চলাচলের উন্মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
হারুনুর রশীদ বলেন, ‘প্রথম টিউবের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি পুরো প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। দুই টিউবের অভ্যন্তরে সড়ক এবং টানেলের দুই প্রান্তে সংযোগ সড়ক ও গোলচত্বরের নির্মাণ কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে। টানেলের ভেতরে বৈদ্যুতিক লাইট স্থাপন, অগ্নিপ্রতিরোধক বোর্ড স্থাপন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, পাম্প স্থাপন, টানেলের ভেতরে সাজসজ্জা ও বাতাস চলাচলের জন্য ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা চালুর কাজ চলছে। আগামী মাসের মধ্যেই শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।’
এদিকে আগামীকাল শনিবার টানেলের প্রথম টিউব উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া চট্টগ্রাম প্রান্তে টানেলের প্রবেশ মুখের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একাধিক মন্ত্রী, সাংসদ সদস্য, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রশাসনের ঊদ্র্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নদীর তলদেশে এই টানেল নির্মিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নদীর তলদেশে নির্মিত এটিই প্রথম টানেল। কর্ণফুলীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে বর্তমান সরকার। পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলীর অপর প্রান্তে আনোয়ারা পর্যন্ত দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। নদীর এক প্রান্ত থেকে টানেলের ভেতর দিয়ে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ৬ মিনিট সময় লাগতে পারে বলে প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। প্রায় তিন বছর পর প্রধানমন্ত্রী সফলভাবে স্থাপন সম্পন্ন হওয়া প্রথম টিউবের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন।


প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২ | সময়: ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ