সর্বশেষ সংবাদ :

সেনা সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী: নেতৃত্বের প্রতি অবিচল, দেশ সেবায় নিয়োজিত থাকুন

সানশাইন ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে’ দেশ সেবায় নিয়োজিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর ৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড ও মেকানাইজড ইউনিটগুলোর পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এই আহ্বান আসে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সেনাবাহিনীর সকল সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থা ও পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সমন্বয়ে নিষ্ঠার সাথে দেশের সেবায় সব সময় নিজেদের নিয়োজিত রাখেন।”
৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড ও মেকানাইজড ইউনিটগুলোর পতাকা উত্তোলনের এই অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, এই পতাকার মর্যাদা সব সময় সমুন্নত রাখতে হবে এবং পতাকার মর্যাদা রক্ষার সাথে দেশের মর্যাদা রক্ষা করাও প্রতিটি সৈনিকের দায়িত্ব।”
দেশের পররাষ্ট্র নীতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা কারও সাথে যুদ্ধ করব না। আমরা যুদ্ধ চাই না। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি জাতির পিতা দিয়ে গেছেন যে ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’। এটাই আমরা বিশ্বাস করি।” আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি চাই আমাদের সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনী কখনো কোনো দিক থেকে পিছিয়ে থাকবে না।“
তিনি বলেন, আধুনিক সব ধরনে যুদ্ধ সরঞ্জামের সঙ্গে সেনা সদস্যদের পরিচিতি হতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পিছিয়ে না থাকে। নিজেকে ‘সেনা পরিবারের একজন সদস্য’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার ভাইয়েরা এই পরিবারেরই (সেনাবাহিনী) ছিল। যখনই আমি সেনাবাহিনীর কোনো অনুষ্ঠানে আসি, খুব স্বাভাবিকভাবেই আমার ভাইদের কথা আমার মনে পড়ে।”
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা যে খুনিদের বিচার না করে পুরস্কৃত করেছিল, সে কথা এ অনুষ্ঠানেও বলেন প্রধানমন্ত্রী। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দেশের ‘সংকটময়’ পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর ‘উন্নয়ন ও অগ্রগতির’ চিত্র তিনি সেনা সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে বাংলাদেশে ধারাবাহিক গণতন্ত্র রয়েছে বলেই আমরা সবগুলো ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।“ সেনাবাহিনীর সদস্যেদের সেবামূলক কাজের প্রশংসা করে তাদের ধন্যবাদও জানান সরকার প্রধান। তিনি বলেন, দেশের যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আর্তের সেবায় এগিয়ে যায়, মানুষের পাশে থাকে।
ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে উন্নত দেশগুলোতে শুরু হওয়া মন্দার আঁচ যে বাংলাদেশেও লেগেছে, সে কথা এ অনুষ্ঠানেও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “সেখানে খাদ্য মন্দা দেখা দিচ্ছে। সেভাবে বাংলাদেশেও একই অবস্থাৃ তার আঘাত বাংলাদেশেও এসে পড়েছে। তারপরও আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদেরকে এখন থেকে নিজেদেরকে অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে।”
২০২৩ সালে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে- আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর এমন উদ্বেগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের নিজেদের ভূমিকায় নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের সঞ্চয় করে এবং কৃচ্ছ্রতা সাধন করে চলতে হবে। আমরা আশা করি সকলেই সেইভাবে চলবেন।” দেশের যে উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা, সেটা অব্যাহত থাকবে বলেও অনুষ্ঠানে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “এই মাতৃভূমিকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলব যেন বিশ্বের কেউ বাংলাদেশকে হেয় করতে না পারে।” সাভার সেনানিবাসের সিএমপিসিঅ্যান্ডএস প্যারেড গ্রাউন্ডে এ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২ | সময়: ৫:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ