সর্বশেষ সংবাদ :

পবার বিল নেপালপাড়া চাষী রহিম বক্স একাডেমিতে পকেট কমিটি করার পায়তারা

ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন অদৃশ্য কারণে স্থগিত

নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর পবা উপজেলার বিল নেপালপাড়া চাষী রহিম বক্স একাডেমির ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অদৃশ্য কারণে স্থগিত হয়ে গেছে। সোমবার (৪ এপ্রিল) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে পকেট কমিটি করার জন্য ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তফসিল অনুযায়ী পবা উপজেলার বিল নেপালপাড়া চাষী রহিম বক্স একাডেমির ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সোমবার (৪ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এই নির্বাচনে ১১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র উত্তোলন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমাও দিয়েছিলেন। এর আগে, গত ১৩ মার্চ প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। ১৬ মার্চ ছিল মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন, ২০ মার্চ যাচাই-বাছাই এবং ২২ মার্চ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল।

সূত্র অনুযায়ী, যাচাই-বাছাই শেষে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সোমবার পূর্ব ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কোনো ধরনের নোটিশ জারি না করেই ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ জুন প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুজ্জামানের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আর বিদ্যালয়টিতে একটি পদে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, দুইটি পদে এমএলএসএস, একটি পদে পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের কথা রয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে- প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিদ্যালয় পরিচালননার অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ইয়াছিন আলীর যোগসাজশে উক্ত পদগুলোতে নিয়োগ দিতে বড় ধরনের একটা নিয়োগ বাণিজ্য করবেন। এজন্যই ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদে ভোটগ্রহণ না করে নিজেদের ইচ্ছেমত পকেট কমিটি গঠনের পায়তারা করছেনও বলেও অনেককে অভিযোগ করেছেন।

জানতে চাইলে অভিভাবক সদস্য প্রার্থী গোলাম হায়দার শিমুল বলেন, ‘কী কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে একটা ‘নেগোসিয়েশন’ হচ্ছে বলে শুনেছি। যার কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান ভোটগ্রহণ আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছেন বলে শুনেছি।’

আরেক অভিভাবক সদস্য প্রার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়েই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে। এটি কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে তা আমার বোধগম্য নয়। এর একমাত্র কারণ নিজেদের মত করে পকেট কমিটি গঠন করে নিয়োগ বাণিজ্য করা। আমি চাই বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে শান্তিপূর্ণভাবে অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।’

জানতে চাইলে পবা উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়টির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এই নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছেন। কেন এই নির্বাচন স্থগিত হয়েছে তিনি এবং প্রধান শিক্ষক এই ব্যাপারে বলতে পারবেন।’ আপনি কোন ক্যাটাগরিতে বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আমার নিকট সিভি এবং ছবি চেয়েছিল, আমি দিয়েছিলাম। পরে জানলাম, আমাকে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করা হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ দাবি করে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

পবা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শিরীন মাহবুবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমাকে ফোনে জানান, তিনি ভীষণ অসুস্থ, মাথা তুলতে পারছেন না। এজন্য তিনি বিদ্যালয়ে আসতে পারবেন না। সঙ্গত কারণেই তিনি না আসলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না এটাই স্বাভাবিক।’


প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২২ | সময়: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর