সর্বশেষ সংবাদ :

ইউএনওর কাছ থেকে বাইসাইকেল পেয়ে খুশিতে আত্নহারা নাজনিন

নুরুজ্জামান,বাঘা : উপহার পেলে কে-না খুশি হয় ? সেটি বড়, মাঝারি , কিংবা ছোট-যাই হোকনা কেন, এর আলাদা একটা গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। আর এটি যদি হয় কোন শিশুর জন্য কাঙ্খিত উপহার , তাহলেতো আর কোন কথায় থাকে না !

প্রিয় পাঠক , আজকে যে শিশুটির কথা বলছি, তার নাম নাজনিন। সে বাঘার তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে বড়। ১০ বছর পূর্বে বাবাকে হারিয়েছে। সরকারের দেয়া বিধবা ভাতা আর অন্যের বাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্টের মাঝে সংসার চালায় মা’। যেনো নুন আন্তে পান্তা ফুরায় ওদের। তাই বলে কি মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হবেনা ? শেষ অবধি এ খবরটি শুনতে পান বাঘা উপজেলার মানবিক নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা।

মঙ্গলবার দুপুরে ঐ শিক্ষার্থী সহ তার পরিবারকে উপজেলা চত্বরে ডেকে পাঠান তিনি। অত:পর তার মায়ের সামনে ঐ শিক্ষার্থীর হাতে সখের বাইসাইকেল তুলে দেন পাপিয়া সুলতানা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বেশ কয়েকজন অফিসার। সাইকেল পেয়ে ওই মুহুর্তে নাজনিনের মায়ের চোখে অশ্রু ছল-ছল করছিল।

নাজনিন এর মা’ শিরিনা বেগম এ প্রতিবেদককে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ইউএনও আপা আমার মেয়েকে নিজ অর্থায়নে তার সখের বাইসাইকে উপহার দিবে এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি আপা যেনো এমনি ভাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পারেন সারা জীবন।

বাঘার সুধী জনরা জানান, আমাদের উপজেলার নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা সর্বদা হাসজ্বল এবং সহজ সরল একজন সাদা মনের মানুষ। তাঁর কাছে কোন অসহায় মানুষ খালি হাতে ফিরেন না। তিনি সকল প্রকার মানুষকে তার কার্যালয়ে প্রবেশ করার সুযোগ দেন। এ ছাড়াও শিক্ষার মান উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট।

বাঘা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নাফিজ শরীফ বলেন , ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে টাঙ্গাইলে অবস্থিত শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে সুযোগ প্রাপ্ত বাঘার একজন ছাত্রী টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না জানার পর, নির্বাহী অফিসার তাঁর ভর্তির যাবতীয় টাকা পরিশোধ করে ঐ শিক্ষার্থীকে মেডিকেল কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন। এ ছাড়া এ বছর কোরবানী ঈদে গরু কোরবানী করে উপজেলার তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী সহ সমাজের অসহায় ও দুস্থদের মাঝে মাংস বিতরণ করেন তিনি। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান সকল অফিসার বৃন্দ।

এ বিষয়ে পাপিয়া সুলতানা বলেন, আমার কাজ হচ্ছে সরকারের উন্নয়কে গতিশীল করা সহ মানুষের খেদমত করা। আমরা স্বামী-স্ত্রী দু’জনই চাকরি করি। আমি চাই , সরকারী সহায়তার পাশা-পাশি আল্লাহ খুশি রাখতে মানব সেবাই কাজ করতে। আমার সাধ্যের মধ্যে যতোটুকু সম্ভব, ঠিক ততটুকুই চেষ্টা করি মাত্র। তিনি শিশুটির উদ্দেশ্যে বলেন, কন্যা শিশু তুমি এগিয়ে যাও অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর আত্মবিশ্বাসের সাথে। এই সাইকেল টা হোক তোমার স্বপ্নপূরণের প্রথম সহায়ক।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২১ | সময়: ৪:৪১ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ