ভেতরে সার্জিক্যাল ব্লেড রেখেই অস্ত্রোপচার!

সানশাইন ডেস্ক:গাজীপুরের শ্রীপুরের দুর্লভপুর গ্রামের শুক্কুর আলী নামের এক কৃষকের ষাড় গরুর অস্ত্রোপচারের সময় ভেতরে সার্জিক্যাল ব্লেড রেখেই ব্যান্ডেজ করার অভিযোগ উঠেছে ভেটেনারী সার্জন সামিউল বাছিরের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তার অসুস্থ গরুটি নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন কৃষক শুক্কুর আলী। এর আগে, গত ১৭জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের স্থানে ড্রেসিংএর এক পর্যায়ে ভেতর থেকে বের করে আনা হয় সেই ব্লেড।

জানা যায়, হতদরিদ্র কৃষক শুক্কুর আলীর সহায়-সম্বল বলতে দুটি গবাদি পশু রয়েছে। অন্যের জমি বর্গাচাষ করেই মূলত চলে তার সংসার। হঠাৎ করেই গত ডিসেম্বর মাসে তার একটি গরুর(ষাড়) ঘাড়ে একটি পিন্ড তৈরী হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়েই কোন উন্নতি না হওয়ায় তিনি তার গরুটি নিয়ে চলে আসেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে। সেখানে পরপর দুই দিন ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসার এক পর্যায়ে গত ১৮ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার করেন ভেটেনারী সার্জন সামিউল বাছির। অস্ত্রোপচারের সময় ভেতরে সার্জিক্যাল ব্লেড রেখেই ব্যান্ডেজ করে দেন চিকিৎসক। বাড়ীতে নেয়ার পর গরুটির দিন দিন অবনতি হতে থাকে। অস্ত্রোপচারের স্থানে পচন ধরে। তিনি আবার স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। গত ১৭জানুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের স্থানে ড্রেসিংএর এক পর্যায়ে ভেতর থেকে বের করে আনা হয় সেই ব্লেড। এদিকে গরুটির অবস্থাও দিন দিন খারাপ হতে থাকলে গরুর মালিক বৃহস্পতিবার তার অসুস্থ গরুটি নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন।

প্রাণী সম্পদ সম্পদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এ গরুটি ব্লাক কোয়াটারে (বাদলা রোগ) আক্রান্ত ছিল। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করালেও সুস্থ না হওয়ায় হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় ভেটেনারী সার্জন সামিউল বাছির গুরুটির অস্ত্রোপচার করেন।

গরুর মালিক শুক্কুর আলী বলেন, তিনি অস্ত্রোপচারের সময় উপস্থিত ছিলেন। কাজের শেষ পর্যায়ে চিকিৎসক এ কাজে ব্যবহৃত সার্জিক্যাল ব্লেড হারিয়ে ফেলেন। পরে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে নতুন ভিন্ন আরেকটি ব্লেড দিয়ে তিনি কাটাছেড়ার কাজ শেষ করেন। চিকিৎসকের অবহেলায় তার গরুটি এখন মুমূর্ষ অবস্থায়। চোখের সামনেই মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে সে। অবুঝ এ প্রাণীটির কি দোষ? তার তো সবই শেষ হয়ে গেল। অবহেলার জন্য তিনি এ চিকিৎসকের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবী করেন।

চিকিৎসক সামিউল বাছির বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় ভিতরে ব্লেড তিনি রাখেননি। গরুটি বহুদিন ধরেই অসুস্থ। তাকে হেয় করতেই মূলত গরুটির মালিক এমন দাবী করছেন।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রুকুনুজ্জামান পলাশবলেন, একজন ভুক্তভোগী চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ এনেছেন। গরুটি নিয়ে তিনি হাসপাতালেও এসেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবো। যদি অবহেলার প্রমান পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সানশাইন/জানুযারী ২০/ইউ


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ | সময়: ৫:৫৮ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ