সর্বশেষ সংবাদ :

বিজয়ের মাস

সানশাইন ডেস্ক : আজ ১৫ ডিসেম্বর। একাত্তরের এইদিনে পাক হানাদারদের শেষ আশাও মিইয়ে গেল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল নিয়াজী বুঝে গেল, মার্কিন সপ্তম নৌবহর তাকে সাহায্য করতে আসবে না। ফলে ১৫ ডিসেম্বর সকালে সব আশা ছেড়ে দিল। শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব নিয়ে বিদেশী দূতাবাসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করল বিধ্বস্ত নিয়াজী। কিন্তু শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব ভারত সরকার প্রত্যাখ্যান করলে আরও ভেঙ্গে পড়ে পাক হানাদাররা। মিত্রবাহিনী ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টার মধ্যে বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিল।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা সেই প্রস্তাব পাঠিয়ে দেয় দিল্লীর মার্কিন দূতাবাসে। সেখান থেকে পাঠানো হয় ওয়াশিংটনে। এর পর ওয়াশিংটন ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাসের কাছে জানতে চাইল, নিয়াজীর এই প্রস্তাবে পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সমর্থন আছে কিনা। প্রস্তাবের মূল কথা- আমরা যুদ্ধ বন্ধ করেছি। তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত গোটা পাক বাহিনীকে চলে যেতে দিতে হবে, কাউকে গ্রেফতার করা চলবে না।
জেনারেল নিয়াজী মার্কিন দূতাবাসের কাছ থেকে এই আশ্বাস পায় যে, মার্কিন সপ্তম নৌবহর তার লোকজনকে পশ্চিমে নিয়ে যাবে। ঢাকার অন্যান্য বিদেশী দূতাবাস কিন্তু এ সময় আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়েছিল। বিদেশীরাও বুঝেছিল নিয়াজী লড়াই চালিয়ে সুবিধা পাবে না। শুধুই লোক মারা যাবে। ১৫ তারিখ দিল্লীর মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে ভারত সরকার খবর পেল নিয়াজী শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণ করতে চায়। কিন্তু ভারত সরকার এ প্রস্তাব নাকচ করে দিল। ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের পাক বাহিনীকে এই আশ্বাস দিতে রাজি যে, যুদ্ধবন্দীরা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী ব্যবহার পাবেন।
পাকি জেনারেল নিয়াজীর শর্তসাপেক্ষে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব পেয়ে ভারতীয় বাহিনী মনে করে এটি তাদের কৌশল। নিয়াজীর প্রস্তাবকে তাদের কাছে মনে হলো এটি যুদ্ধবিরতি, আত্মসমর্পণ নয়। কিন্তু মিত্রবাহিনী বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুতেই রাজি নয়। এ জন্য ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় দেয়া হলো। আর এ পর্যন্ত ভারতীয় বিমান বাহিনী কোন আক্রমণ করবে না। এর মধ্যে আত্মসমর্পণের খবর না পেলে আবার আক্রমণ শুরু করা হবে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২১ | সময়: ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ