সর্বশেষ সংবাদ :

বিজয়ের মাস

সানশাইন ডেস্ক : বিজয় মাসের আজ চতুর্থ দিন। হাজার বছর ধরে স্বাধীনতাহীন বাঙালী জাতি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ অর্জন করেছে এ মাসেই। আর এ অর্জনে দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত আর লাখো মা-বোনের সম্ভ্রম। তবে এবারের বিজয়ের মাস এসেছে এক অন্যরকম গৌরব নিয়ে। কারণ বাংলাদেশের জন্মের এবার ৫০ বছর, সুবর্ণজয়ন্তী। তাই এক অন্যরকম আনন্দে-উচ্ছ্বাসে মেতেছে গোটা দেশবাসী।
যতদিন এ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে, ততদিন ডিসেম্বর বিজয়ের মাস হিসেবে উদযাপিত হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি, ঘাতক দালাল রাজাকার, আলবদর, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসররা যুগ যুগ ধরে ভীষণ ভয়ে থাকবে, নিজেদের বাঙালীর তীব্র ঘৃণা ও ধিক্কার থেকে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করবে এ মাসে।
৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১। ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ এক ভিন্ন এক মাত্রা পেতে শুরু করে। বর্ষা, শরত আর হেমন্ত পেরিয়ে শুরু হয় শীতের মৌসুম। গ্রামবাংলা জুড়ে শীত নামে। কিন্তু শীত নেই মুক্তিপাগল বাঙালীর। হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে দেহের রক্ত যেন টগবগিয়ে ফুটছে।
একাত্তরের রক্তক্ষরা এই দিনে চারদিকে বীর বাঙালীর বিজয়, আর পাক হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর। দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যুদস্ত হতে থাকে উর্দুভাষী হানাদাররা। ডিসেম্বর মাসের প্রতিটি দিনই শত্রুর পরাজয়ের ক্ষণ গণনা চলছিল। এক একটি দিনে রচিত হচ্ছিল বাঙালীর বীরত্বগাথার নিত্যনতুন ইতিহাস। স্বাধীনতার ৫০ বছরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সেসব বীরত্বগাথা ইতিহাস আমাদের নতুন করে বাঁচার আশা জাগায়।
ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দখলদার পাক হানাদারদের পরাজয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে পাকিস্তানীরা সশস্ত্র যুদ্ধের পাশাপাশি কূটনৈতিক যুদ্ধও শুরু করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানীদের ষড়যন্ত্রের দোসর হয়ে ওঠে। কিন্তু তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন অকৃপণ সহযোগিতায় সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। ৪ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের কারণে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হয়নি।
একাত্তরে এই দিন সকালে নয়াদিল্লীতে প্রবাসী সরকার এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা দফতরের প্রধানরা আলোচনায় বসে দেখলেন যৌথ বাহিনী ঠিক ঠিকই এগিয়েছে। প্রথমত, তারা কোথাও শহর দখলের জন্য অগ্রসর হয়নি। দ্বিতীয়ত, কোথাও শত্রু পাকিস্তানী ঘাঁটির সঙ্গে বড় লড়াইয়ে আটকে পড়েনি। তৃতীয়ত, পাকিস্তানী সমরনায়করা তখনও বুঝতে পারেনি ভারতীয় বাহিনী ঠিক কোন দিক দিয়ে ঢাকায় পৌঁছতে চাইছে। বরং তখনও তারা মনে করছে ভারতীয় বাহিনী সীমান্তের মূল পাকিস্তানী ঘাঁটিগুলোর ওপর আক্রমণ চালাবে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২১ | সময়: ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ