সর্বশেষ সংবাদ :

দুর্গাপুর থানার ওসি’র মানবিকতায় মানসিক ভারসাম্যহীন ঝড়ু ফিরলো আপন ঠিকানায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, দুর্গাপুর: মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২ টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হকের কাছে একটি ফোনকল আসে। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয় একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তিকে এলাকায় ঘুরতে দেখে ওই এলাকার লোকজন তাকে আটকে রেখেছে। ওসি নাজমুল মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেন। এইখানেই শেষ নয়। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যাক্তির দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে রাতেই পাবনা জেলার বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করে ছবি পাঠিয়ে ওই ব্যাক্তির নাম পরিচয় নিশ্চিত হতে কাজ শুরু করেন। কিছু সময় পরেই ওই ব্যাক্তির নাম পরিচয় সনাক্ত করার বিষয়টি পাবনার বেড়া থানা থেকে ওসি নাজমুল হকের কাছে নিশ্চিত করা হয়। বুধবার সকালে মানসিক ভারসাম্যহীন ঝড়ুর পরিবারের স্বজনরা দুর্গাপুর থানায় গিয়ে ঝড়ুকে ফিরে পেয়ে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। ঝড়ুর পরিবারের স্বজনরা ওসি নাজমুল হকের এমন মানবিকতার প্রশংসা করেন।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আমার কাছে একটা ফোন আসলো, একজন লোক রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি তাৎক্ষণিক রাত্রিকালীন মোবাইল ডিউটি টিমকে পাঠাই। তারা ঘটনাস্থলে পৌছে আমাকে জানায় একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মনে হচ্ছে। আমি বিষয়টি জানার পর সেখানে গিয়ে দেখি লোকটা কিছুটা অসুস্থ। তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে থানায় নিয়ে আসি। তাকে তার পরিচয় ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে সে কিছুই বলতে পারে না, শুধু বলে সিএন্ডবি। তখন আমার কাছে মনে হলো হয়তো পাবনা জেলার সিএন্ডবি এর আশেপাশে তার বাড়ি হতে পারে।

ওসি আরও বলেন, তখন রাত ২টা ৩৫ মিনিট। আমি আমার সিনিয়র পাবনা জেলার বেড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ স্যারকে ঘটনাটি বলি এবং ছবি পাঠাই। স্যার প্রায় ৪০ মিনিট পর জানান ওর ঠিকানা পাওয়া গেছে। প্রায় ৪/৫ মাস আগে সে হারিয়ে গেছে। স্যার তাদের মোবাইল নম্বর আমাকে দিলে আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করি। স্যারের সহযোগিতায় তার ভাই ও মা দুর্গাপুর থানায় আসলে অজ্ঞাত লোকটার পরিচয় ঝড়ুচন্দ্র দাস (৩৫) পিতা জ্যোতিন চন্দ্র দাস গ্রাম করমজা থানা সাঁথিয়া জেলা পাবনা বলে জানতে পারি। পরর্বতীতে ঝড়ুকে তার মা ও ভাইয়ের কাছে বুঝিয়ে দিই। ফলে ঝড়ু ফিরে পেলেন আপনজন, ফিরে গেলেন আপন ঠিকানায়।

মানসিক ভারসাম্যহীন ঝড়ুর ভাই জানান, তার ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝেমাঝে সে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। কিছুদিন আগেও সে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে পাবনার সাঁথিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। পাগল ভেবে অনেকেই হয়তো ঝড়ুর সাথে ভালো আচরন করেননা। কিন্তু দুর্গাপুর থানার ওসি স্যার যে মানবিকতা ও মহানুভবতা দেখিয়েছেন সে জন্য স্যার ও থানা পুলিশের প্রতি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পুলিশের এমন মানবিক কাজ হয়তো অনেকের জন্যই অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।


প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২২ | সময়: ৫:০০ অপরাহ্ণ | সানশাইন