সর্বশেষ সংবাদ :

ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম, ১০ কেজি পায়নি কেউ, সুবিধাভোগীদের ক্ষোভ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘিতে একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নে বালতি দিয়ে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করায় ১০ কেজি করে চাল পায়নি কোনো সুবিধাভোগী। বৃহস্পতিবার সকাল

থেকে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ‘উপকারভোগীদের মধ্যে দশ কেজির জায়গায় কোথাও ৫ কেজি আবার কোথাও ৭ কেজিও পেয়েছেন। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুবিধাভোগীরা।

জানা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উপজেলার
৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৪ হাজার ২৮১ জনের মাঝে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হয়। এরমধ্যে ৬টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ৬৬০ এবং সান্তাহার পৌরসভায় ৪ হাজার ৬২১ জনের মাঝে এসব চাল বিতরণ করা হয়। সোমবার (২৫ এপ্রিল) থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব চাল বিতরণ কার্যক্রম চলে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নে ১ হাজার ৭৬৩ জনের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে চাল নিতে আসা ওই ইউপির আসলাম, রাজু, রাশেদা ও ইমরোজ নামের সুবিধাভোগী অভিযোগ করে বলেন, ১০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা থাকলেও মাপজোক না করেই সেখানে বালতিতে তাদের চাল দেয়া হয়েছে। পরে এসব চাল মেপে দেখতে পান প্রতিজনের চাল ৫-৭ কেজি ওজন। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক আবু জানান, অভিযোগটি সত্য নয়। সবাইকে ১০ কেজি করেই চাল দেয়া হয়েছে। এদিকে উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার চাল পাওয়া সুবিধাভুগী বুচিয়া রাণী ও সাবিত্রি রাণীর নামে দুজনকে চালের স্লিপ দেয়া হলেও তারা চাল পেয়েছেন ৬ কেজি করে। বিষয়টি কাকে জানাবে তাদের জানা নেই। জানতে চাইলে পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু জানান, কার্ডধারী প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। হয়তো যারা কার্ড ছাড়া চাল পেয়েছেন তাদের পরিমানে কম হতে পারে।

এছাড়া নশরতপুর ইউনিয়নের ডুমুরিগ্রামের বিপ্লব নামের এক সুবিধাভোগী চাল নিতে গিয়ে ১০ কেজির জায়গায় তাকে ৭ কেজি চাল দেয়ায় তিনি অভিমান করে চালগুলো না নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নশরতপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, আমি দাঁড়িয়ে থেকে চালগুলো বিতরণ করেছি। চাল কম পাওয়ার ঘটনা নেই। শত্রুতামূলকভাবে কেউ বিষয়টি ছড়াচ্ছে। বুধবার সকালে সান্তাহার ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০২ জনের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। ইউপির দমদমা গ্রামের ছালেহা বেওয়া বলেন, ১০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে ৯ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল পেয়েছি। তবে গত ঈদে চাল পেয়েছিলাম সাড়ে ৭ কেজি। অর্থাৎ এবার প্রায় দুই কেজি বেশি পেয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি জানান, ট্যাগ অফিসার, ইউপি সচিব ও সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে এসব চাল বিতরণ করা হয়েছে। কার্ডধারী ছাড়াও অনেক গরিব ও দুস্থ মানুষকে চাল দেয়া হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। তবে শত্রুতামূলক ভাবে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। শুধু তাই তাই নয়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার চিত্র একই রকম। প্রতিটি ইউপিতেই বালতিতে করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আমির হোসেন জানান, ঈদ উপলক্ষে মানবিক সহায়তার চাল বিতরণ কর্মসূচির প্রত্যেকটি সুবিধাভোগী মাথাপিচু ১০
কেজি করে চাল পান। বালতিতে বা চাল কম দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যেক ইউপি ও পৌরসভায় চাল বিতরণের জন্য একজন করে ট্যাগ অফিসার দেয়া রয়েছে। অনিয়মের বিষয়ে তাকে কেউ অভিযোগ করেন নি।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২২ | সময়: ৪:৪৭ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine