বাঘায় গমে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ন্যায্য মূল্যের দাবি কৃষকদের

নুরুজ্জামান,বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় এ বছর ব্যাপক হারে উৎপাদন হয়েছে বিভিন্ন জাতের গম । এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে উপজেলার পলি গঠিত পদ্মার চরাঞ্চলে। এই সকল উৎপাদিত গম আগামী এক মাসের মধ্যে কাটা শেষ হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আসা করা যাচ্ছে, বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে এবার গমের বাম্পার ফলন হবে। তবে বর্তমান বাজার মুল্য হিসাবে নতুন গম উঠার পর ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

বাঘা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এবার অত্র উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের গম উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৩ মেট্রিক টন। এ সকল উৎপাদিত গমের মধ্যে সোনালী, প্রদীপ, বিজয়, শতাব্দী,সৌরভ, গৌরব ইত্যাদি উল্লেখ যোগ্য। তবে এ বছর প্রদীপ ও বিজয় জাতের গম সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ। এর কারণ হিসাবে তারা জানান , প্রদীব গমের শিশ বড় এবং দানা মোটা হওয়ায় কৃষকরা এই গম চাষে বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

এর পর রয়েছে বিজয় এবং শতাব্দী। তবে সোনালী গম বিগত সময়ে ব্যাপক হারে আবাদ হলেও বর্তমানে এর উৎপাদন অনেকটা কমে এসছে বলে উল্লেখ করেন তাঁরা। তার পরেও গুনগত মানের দিন থেকে অনেকেই চাষ করেছেন। কৃষকদের মতে, আমাদের দেশের মানুষের কাছের ভাতের পরেই রুটির স্থান। এ দিক থেকে মৌসুম ভিত্তিত যাদের এক খন্ড উচু জমি রয়েছে তারই গমের চাষ করেছেন। এ দিক থেকে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার লক্ষ মাত্রার চেয়ে গমে বেশি ফলন আশা করছেন অত্র অঞ্চলের কৃষকরা।

সরেজমিন উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, অংখ্য কৃষক এবার গমের আবাদ করেছেন। চরাঞ্চলের কৃষক সেকেন্দার আলী বলেন, আমি এবার ৫ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছি। আসা করছি আবহাওয়া ভাল থাকায় বিগত যে কোন বছরের তুলনায় এবার ভাল ফলন পাবো। এ দিক থেকে গত বছর তিনি প্রতি বিঘাতে ১৩ মন হারে ফলন পেয়েছেন আর এবার ১৫ থেকে ১৬ মন হারে ফলন পাবেন বলে আশা করছেন।

অপর একজন কৃষক চরাঞ্চলের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, কৃষকরা কষ্ট করে ফসল ফলানোর পর যদি কাংখিত মুল্য না পায় , তবে পরের বছর সেই ফসল উৎপাদনের উপর তাদের চাহিদা কমে যায়। তাঁর অভিযোগ, সরকার গম ক্ষরিদের ঘোষনা দিলে কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট (খাদ্য গোডাউ-এ)ন্যায্য মূল্য পেলেও কৃষকদের কাছে তারা কম মুল্যে গম ক্রয় করেন। আর কৃষকরা চাইলেও গোডাউনে গম দিতে পারেন-না। তিনি এ বিষয়টি দেখ-ভালের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।

এদিকে সমতল এলাকার বারখাদিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক ও পিরগাছা এলাকার সুলতান মিয়ার সাথে কথা বললে তারা এ বছর গম উৎপাদনের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে বলেন, গত বছর আমন ধান উৎপাদন করে যে টুকু তি হয়েছিল এবার ফলনের দিক থেকে চিন্তা করলে তা পুশিয়ে যাবে গমে। তাঁরা খুব শীর্ঘই গম কাটা শুরু করবেন বলে জানান। একই সাথে গমের বর্তমান যে বাজার রয়েছে ১১ থেকে ১২ শ’ টাকা মন সেটি নতুন গম উঠার পর নিয়ন্ত্রন রাখার জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করেছেন ।

সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান বলেন, এ বছর বাঘায় যে কোন ফসলের তুলনায় গমের উৎপাদন ভাল হবে। এর কারন হিসাবে তিনি সময় মতো সেচ, উন্নত মানের বীজ সরবরাহ, এবং আবহাওয়া অনুকুল থাকার কথা ব্যক্ত করে বলেন, এ বছর লক্ষ মাত্রার চেয়েও অনেক বেশি পরিমান গম উৎপাদন হবে। তাঁরা ভালো গম উদপাদনের লক্ষে কৃষকদের সবসময় সুপরামর্শ দেয়া সহ বেশ কিছু প্রদশনীয় ক্ষেত করেছেন। যা সকলের নজড় কাড়বেন।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২২ | সময়: ১০:০০ পূর্বাহ্ণ | Daily Sunshine