সর্বশেষ সংবাদ :

বগুড়া শেরপুরে ৫ শতক জমির বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ

মিন্টু ইসলাম শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি, বগুড়ার শেরপুরের শাহবন্দেগী ইউনিয়নের উচরং বন্দে আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সনি আলম, নয়ন আলী ও বিপ্লব হোসাইন নামে তিনজন চাকরীপ্রার্থী এই অভিযোগ তোলেন। অভিযোগ তুলে তাঁরা বলেন, টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁদের নিয়োগের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ১০ নভেম্বর স্থানীয় একটি পত্রিকায় ওই স্কুলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে তারা নিয়ম অনুসরণ করে আবেদন করেন। এর কিছুদিন পরে তাঁরা জানতে পারেন, আবেদনপত্রে স্বাক্ষর না থাকার কারণে তাঁদের বাছাই প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারার কারণেই নিয়োগ পরীক্ষা থেকে দূরে রাখা হয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন। তাঁরা বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে মো. ফেরদৌস আলম নামে প্রার্থীর কাছ থেকে ৫ শতক জমি, যার আনুমানিক মূল্য ১০ লক্ষ টাকা এবং নিরাপত্তাকর্মী পদে মো. আল-আমিন নামের প্রার্থীর কাছ থেকে নগদ ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগের পাঁয়তারা করছে।
এ বিষয়ে আবেদনকারী নয়ন আলী বলেন, ‘আমার আবেদপত্রে স্বাক্ষর ছিল। তার ফটোকপিও আমার কাছে আছে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুয়া আবেদনপত্র তৈরি করে স্বাক্ষর না থাকার মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমাকে বাদ দিয়েছে। তারা আগে থেকেই প্রধান শিক্ষকের চাচাতো ভাই ফেরদৌস আলমকে ৫ শতক জমির বিনিময়ে পরীক্ষার আগেই নিয়োগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে এলাকার সবাই অবগত বলে তিনি জানান। তাই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
একই দাবি সনি আলমের। তিনি বলেন, ‘আবেদন করার কয়েক দিন পর জানতে পারি আমার আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি মৌখিকভাবে কারণ জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর আমি গত ১৪ ডিসেম্বর আমার আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমার নোটিশের জবাব না দিয়েই ২৯ ডিসেম্বর গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।’ এদিকে নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে অবগত নন বলে দাবি করেছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মিন্টু সরকার ও গোবিন্দ চন্দ্র সরকার। তাঁরা বলেন, আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ করেই বুধবার নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে তারা অবগত নন বলে তারা জানান। তারা আরও বলেন, ম্যানেজিং কমিটি তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ছেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আবেদনপত্রে স্বাক্ষর না থাকার কারণে তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। আমরা সনি আলমের লিগ্যাল নোটিশের জবাবও দিয়েছি। আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
স্কুলের নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সদস্য ও শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মেধার ভিত্তিতেই নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান করব। এখানে আর্থিক লেনদেন বা স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বুধবারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিযোগ ওঠা দুই প্রার্থীকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বলেন, নিয়োগের বিষয়ে আমি অবগত নই। এর জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০২১ | সময়: ৮:৩২ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ