সর্বশেষ সংবাদ :

বদলগাছীতে এক যুগে আবাদী জমির পরিমাণ কমলেও বেড়েছে উৎপাদন, এসেছে বৈচিত্রতা

বদলগাছী(নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ

দেশের শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা। এ উপজেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি রবিশস্য ও খরিপশস্য উৎপাদিত হয়। এ উপজেলার ধান ও সবজি পুরো জেলার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পারিবারিক ভাঙ্গনের কারণে নতুন নতুন বসতবাড়ী নির্মাণ, অপরিকল্পিত ও অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ এবং পুকুর খননের ফলে এক যুগে আবাদী জমির পরিমাণ কমেছে ১৭২ হেক্টর। যা প্রতি বছর গড়ে ১৪.৩৩ হেক্টর। আবাদী জমি কমলেও উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি ফসলে এসেছে বৈচিত্রতা।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এক যুগ আগে এ উপজেলায় ধান, গম, সরিষা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের চাষযোগ্য আবাদী জমির পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৪৫৪ হেক্টর। যা বর্তমানে কমে হয়েছে ১৬ হাজার ২৮২ হেক্টর। এক যুগ আগে যে জমিতে শুধু আউশ ও আমন ধান উৎপাদিত হত প্রতি মৌসুমে ১৪ থেকে ১৬ মণ, বর্তমানে সেই একই জমিতে আউশ, আমন ও বোরো ধান উৎপাদিত হচ্ছে প্রতি মৌসুমে গড়ে ১৮ থেকে ২০ মণ। এক্ষেত্রে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন ও কীটনাশকের সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানায় কৃষি অফিস। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের মধ্যে ব্রি-ধান- ৭১,৭৫, ৮১, ৮২, ৮৭,৯৩, ৯১, ১০০ ও বিনা ধান-১৭, ১৯, ২২ বেশি পরিমাণে চাষ হচ্ছে।

 

অফিস আরো জানায়, ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আলু, গম ও সরিষার উৎপাদনও বেড়েছে। বিভিন্ন ধরণের সবজি উৎপাদনে এসেছে বৈচিত্রতা। পূর্বে যে জমিতে শুধু বাড়িতে খাবার জন্য স্থানীয় জাতের বিভিন্ন মৌসুমী শাক-সবজি চাষ করত, সেই জমিতে এখন কৃষক হাইব্রিড জাতের উচ্চ ফলনশীল সবজি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে চাষাবাদ করছে। অনেক অপ্রচলিত ফসল ও ফলের চাষাবাদও শুরু হয়েছে বাণিজ্যিকভাবে। এর মধ্যে রয়েছে মাল্টা, কমলা, থাই পেয়ারা, বরই, লেবু ইত্যাদি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ, বসতবাড়ী নির্মাণ ও পুকুর খননের ফলে আবাদী জমি দিন দিন কমছে। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে ধান, আলুসহ সকল প্রকার ফসলের উৎপাদনই বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, এ উপজেলার কৃষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান ও বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনীর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে চাষাবাদে বৈচিত্র এসেছে। যুগের ব্যবধানে আবাদী জমির পরিমাণ কমলেও মালটা, কমলা, ড্রাগন, থাই পেয়ারাসহ উচ্চ ফলনশীল ফসলের উৎপাদন ব্যাপকহারে বেড়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখানে পণ্য কিনতে আসে। এতে করে কৃষক ফসলের নায্যমূল্য পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছে।

সানশাইন/ শামি


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২১ | সময়: ৫:১৭ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ