বাঘায় আ’লীগ নেতাদের উপর বিদ্রোহী প্রার্থীর হামলা

নুরুজ্জামান,বাঘা :রাজশাহীর বাঘায় ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে কথা বলতে গেলে দলীয় নেতাদের উপর মৌলবাদী কায়দায় হামলার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে মসজিদে মাইকিং করে এ হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় চারটি মোটর সাইকেল ভাংচুর সহ প্রায় ১০ জন আহত হন। এদের মধ্যে দু’জনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতে উপজেলার বাউসা টলটলিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফান সহ চারজনকে আটক করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ ডিসেম্বর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন- আড়ানী, বাউসা এবং চকরাজাপুর ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার রাতে বাউসা ইউনিয়ন আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা আলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক নুর মোহাম্মদ তুফান-কে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করতে যান উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল , যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মন্টু, আ’লীগ নেতা মাসুদ রানা তিলু, অধ্যক্ষ নছিম উদ্দিন, মজিবুর রহমান , বাঘা পৌর সভার প্যানেল মেয়র শাহিনুর রহমান পিন্টু , দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান, বাউসা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন ও আড়ানী পৌর আ’লীগের সভাপতি শহিদুজ্জামান সাইদ সহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।

এ সময় নুর মোহাম্মদ তুফান তাদের সাথে দেখা না করে, উল্টো তার সমর্থীত লোকদের মাধ্যমে পাশ্ববর্তী মসজিদে মাইকিং করান এই মর্মে যে, তাঁর বাড়িতে বহিরাগত লোকজন ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে। এ খবর শুনে তুফানের লোকজন সহ প্রতিবেশী জামাত-বিএনপির লোকজন ধর্মীয় অনূভুতিকে কাজে লাগিয়ে মৌলবাদী কায়দায় উপজেলা আ’লীগের রাজনৈতিক নেতাদের উপরে অতর্কিত হামলা চালান। এ ঘটনায় প্রায় ১০ জন আহত হন এবং চারটি মোটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে গুরুত্বর অবস্থায় বাউসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান (৩০) ও কাজল (২৫) কে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয় এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন, দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান ও মজিবুর রহমান সহ অন্যান্যরা সময়িক ভাবে চিকিৎসা গ্রহন করেন বলে নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

এদিকে মোবাইলে খবর পেয়ে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সাজ্জাদ হোসেন সঙ্গীয় ফোস সহ তাৎক্ষনাত ঘটনাস্থলে যান। অত:পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন এবং হামলার সাথে সম্পৃক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফান (৬০) জয় (২০) উজ্জল (২৬) এবং আশিক (২৫) কে আটক করেন। এ সময় অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।

ওসি জানান, এ ঘটনায় আ’লীগ দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান মোটর সাইকেল ভাংচুর ও অতর্কিত হামলার অভিযোগ এনে ওই রাতেই ৫১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় বাউসা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মলিন-সহ অসংখ্য জামাত-বিএনপি সমর্থীত লোকজনকে আসামী করা হয়েছে। এ ছাড়াও অগ্যাত নামা আরো ১৫-২০ জন আসামী রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন, নুর মোহাম্মদ তুফান ভাই আমাদের দলীয় নেতা। তার মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে আমি কয়েক দফা কথা বলেছি। সর্বশেষ আড়ানী পৌর আ’লীগের সভাপতি শহিদুজ্জামান সাইদ ভাইকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করতেউ চেয়ে ছিলেন। এ জন্যে শনিবার রাত ৮ টার সময় তুফান ভাই সাইদ এর বাসায় যওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি না যাওয়ার এক পর্যায় রাত ৯ টার সময় তাঁকে ফোন করলে তিনি আসছি বলে মোবাইল বন্ধ করে দেন।

ঘটনার এক পর্যায় আমরা তার বাসায় যায়। এরপর তাকে বাহির থেকে ডাকা হলে তিনি দেখা করবেন না বলে জানান। এ সময় আমরা উপজেলা নেতৃবৃন্দ তাকে জানালার কাছে এসে পাঁচ মিনিট কথা বলার অনুরোধ জানালে মুহুর্তের মধ্যে পাশ্ববর্র্তী মসজিদ থেকে তার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে বলে লোকজন ডাকা হয়। মাইকিং শুনে তার লোকজন সহ ঐ এলাকার জামাত-বিএনপির সমর্থীত লোকজন এসে আমাদের উপরে হামলা চালায়। আমরা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি, তুফান ভাই আমাদের সাথে এমনটি আচারণ করবে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ | সময়: ৩:০৪ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ