
প্রতিবেদক: রাজশাহীর দুর্গাপুরে সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইয়ের হাতে বর্বর নির্যাতনে নিহত আওয়ামী লীগের নেতা ইউপি সদস্য আজাহার আলী মেম্বারের ১৫তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা উপজেলার কয়ামাজমপুর গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়।
২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল শত শত মানুষের সামনে উল্টো করে গাছের সাথে টাঙ্গিয়ে জেএমবি সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই ও তার সদস্যদের নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২০০৬ সালের ১৯শে মার্চ মৃত্যু বরণ করেন আজাহার আলী।
স্বাধীন দেশে এইভাবে আর কোনো অপশক্তির হাতে যেন অসহায় ব্যক্তিকে প্রাণ দিতে না হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমনটাই দাবি করেন অসহায় পরিবারের সদস্যরা। মৃত আজাহার আলী মেম্বারের স্ত্রী গোলাপী বিবি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ করার জন্য সেই সময় বাংলা ভাইয়ের হাতে নির্যাতনে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।
আমি চাই আর যেন কোনো নারীকে স্বামী হারাতে না হয়। আর যেন কোনো সন্তানের পিতা হারাতে না হয়। আমি স্বামী হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে দু-বেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে আছি। আমার পরিবার কিভাবে চলছে খবর রাখার কেউ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন আমার পরিবারের দিকে একটু দেখবেন।
নিহত আজাহার আলী মেম্বারের বড় ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হিটলার বলেন, আমার পিতাকে যেভাবে গাছের সাথে টাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যে জেএমবির সদস্যরা নির্যাতন করে হত্যা করেছে তা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার জন্য তাকে জীবন দিতে হয়েছে। অথচ আমার পরিবার কিছু কুচক্র মহলের ইন্ধনে আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
আমার বাবা আজাহার আলী মেম্বার মৃত্যুর আগে আমাকে বলে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পায়ে সালাম করাই তার শেষ ইচ্ছে। কিন্তু তার সেই শেষ ইচ্ছে পূরণ হবার আগেই তার মৃত্যু হয়। তাই আমি চাই পিতার শেষ ইচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পায়ে সুযোগ পেলে একবার সালাম করবো।
২০০৪ সালের ২০ এপ্রিল বাংলা ভাইয়ের হাতে নির্যাতনের শিকার আজাহার আলী মেম্বারকে খুব কাছে থেকে দেখেন কয়ামাজমপুর গ্রামের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি খুব কাছ থেকে জিএমবির সদস্য দ্বারা নির্যাতনের শিকার আজাহার আলী মেম্বারকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছি। এ নির্যাতন চোখে দেখার মত নয়। বলার মতো নয়।
নির্যাতনের পর আজাহার আলী মেম্বারের মৃত্যু হয়েছে বলে চলে যায় বাংলা ভাই। কিন্তু পরে আমি কাছে গিয়ে চিৎকার চেচামেচি করে সবাইকে ডেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করি। দীর্ঘদিন পঙ্গু হয়ে ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ রাতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মরহুম আজাহার আলী মেম্বারের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমি সেই থেকে এই পরিবারের পাশে আছি আগামীতেও থাকবো।
আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানায় যেন, এই নির্যাতিত পরিবারের খোঁজ খবর রাখেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ, শহীদ আজাহার আলী মেম্বারের ছোট ভাই খায়রুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি বেলাল হোসেন, ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আজের আলী, ওয়ার্ড যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু রহমান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানাসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।