আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কলেরা স্যালাইনের সংকট

মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত কারণে প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন অনেক রোগী। এমন সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা দিয়েছে কলেরা স্যালাইন সংকট। সংকটের কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন চাহিদার তুলনায় স্যালাইনের প্রাপ্যতা রয়েছে কম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি দুপুর ১টা পর্যন্ত এক দিনেই ডায়রিয়া রোগে ভর্তি হয়েছেন পুরুষ তিনজন ও শিশু একজন রোগী। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ডায়রিয়া রোগে শিশু ৯২ জন, পুরুষ ৩৩ জন এবং মহিলা ৩০ জন ভর্তি হয়েছেন এই হাসপাতালে। এরমধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
আরো জানা গেছে, এসেনসিয়াল ড্রাগস্ ে২০২২-২৩ অর্থ বছরে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এক হাজার মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইনের চাহিদা দেওয়া ছিল তিন হাজার পিস। তবে পাওয়া গেছে ৮’শ পিস মাত্র। ৫’শ মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইনের চাহিদা দুই হাজার পিস দেওয়া হলেও বিভিন্ন ভাবে তা পাওয়া গেছে মাত্র ৪০ পিস।
সবশেষ আবার ৪ জানুয়ারি আবারও ১ হাজার মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইনের জন্য ১ হাজার পিস চাহিদা এবং ৫’শ মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে ১ হাজার পিস, যা এখনও পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের স্টোরে ১ হাজার মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইন শেষ হয়েছে গত বছরের ২৩ নভেম্বর এবং ৫’শ মিলিলিটারের কলেরা স্যালাইন শেষ হয়েছে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি।
এতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ডায়রিয়া রোগী ভর্তি থাকার কারণে কলেরা স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
একাধিক রোগী জানায়, ডায়রিয়া রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে বাইরে থেকে কলেরা স্যালাইন কিনতে বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সামর্থবানরা স্যালাইন কিনতে পারলেও অসুবিধায় পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা। তবে অন্যান্য প্রায় সকল ওষুধ মিলছে হাসপাতালেই।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত শাহীন রানা নামের এক রোগী বলেন, ‘আজ সকালে ডায়রিয়া জনিত সমস্যার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার বেডে বিছানায় আসলে নার্সরা আমাকে বাইরে থেকে প্রথমে স্যালাইনের সেট কিনে আনতে বলেন। এটি আনার পর তারা আবার স্যালাইন কিনে আনতে বলেন। আমার সাথে লোক না আসায় বিপাকে পড়েছি’।
এবিষয়ে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. রাধেশ্যাম আগরওয়ালার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে না পাওয়ায় তিনি ফোনে বলেন, এ বিষয়ে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারের সাথে কথা বলেন।
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আসিফ আদনান বলেন, ‘এবারের তীব্র শৈত্যপ্রবাহে শীত বেশি হওয়ায় ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় এবছর কলেরা স্যালাইন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পাওয়া গেছে। বাইরে থেকে অনান্য স্যালাইন বা ঔষধ হাসপাতালের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কেনা গেলেও কলেরা স্যালাইন এসেনসিয়াল ড্রাগস্ থেকেই নিতে হয়। তারা আমাদের সরবরাহ করলেই আমরা তা ভর্তি রোগীদের দিতে পারবো। প্রাপ্যতা কম থাকায় এই সংকট দেখা দিয়েছে’।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ | সময়: ৬:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ