বড়াইগ্রামে বিয়ে বাড়িসহ শত্রুতার আগুনে পুড়লো চারটি বাড়ি

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: বড়াইগ্রামে বিয়ের আগের দিন পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে চারটি বাড়ির ১৩টি টিনসেড সেমিপাকা ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অগ্নিকান্ডে পাঁচটি ছাগল ঘটনাস্থলেই পুড়ে মারা যাওয়াসহ পরিবারের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন। এতে নগদ চার লাখ টাকা পুড়ে যাওয়াসহ কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার সম্পদ ভস্মিভূত হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি।
উপজেলার মশিন্দা গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার খাঁনসহ তার তিন ছেলের বাড়িতে বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আশপাশের বাড়িসহ পুড়ে যাওয়া সব ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থদের। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিুকর রহমান পাটোয়ারী ও ওসি আবু সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে আগুনে বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দ্রুত দরজা খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিটি বাড়ির দরজার বাইরে থেকে শিকল আটকানো ছিল। এ সময় চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে দরজা খুলে দেন। খবর পেয়ে বনপাড়া ফায়ার সার্ভিস টিম এসে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্রসহ এসব বাড়ির সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ আব্দুস সাত্তার খাঁন জানান, শুক্রবার আমার নাতনী আশার বিয়ের দিন ধার্য ছিল, এ উপলক্ষ্যে যাবতীয় কেনাকাটা শেষ করা হয়েছিল। কিন্তু এক নিমিষেই আমার সব শেষ হয়ে গেল। কেউ যে শত্রুতা করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা পরিষ্কার।
প্রতিবেশি তরুণ ইমন জানান, ডাকাডাকি শুনে ঘুম থেকে জেগে দেখি সাত্তার খান ও তার ছেলেদের বাড়িতে আগুন লেগেছে। দৌড়ে সেখানে গিয়ে দেখি গেটের বাইরে থেকে আটকানো।
একই সঙ্গে এসব বাড়ির সব ঘরের দরজার ছিটকানি বা শিকল বাইরে থেকে আটকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা। আমরা গিয়ে সেসব দরজার বাঁধন খুলে তাদের উদ্ধার করি। একইভাবে পাশের আরো কয়েকটি বাড়িতেও একইভাবে দরজা আটকে দেয়া হয়েছে বলে পরে জানতে পেরেছি।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, মাস ছয়েক আগে একই গ্রামের মোতালেব মন্ডলের ছেলে জিল্লুর রহমান মন্ডল আমার বড় ভাই আব্দুস সাত্তার খানের জমির শিমের গাছ কেটে নষ্ট করে। পরে স্থানীয়ভাবে সালিশ মিমাংসায় তার ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সে সময়েই জিল্লুর আমার ভাইয়ের ক্ষতি করার হুমকি দিয়েছিল।
এ ব্যাপারে জিল্লুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গতকাল বাড়িতেই ছিলাম না। আমি কেন এমন ঘটনা ঘটাতে যাবো। এ অভিযোগ সঠিক না।
বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আকরামুল হাসান জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও প্রায় সবকিছুই পুড়ে গেছে। তবে তিনি ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ১২ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়াম খাতুন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে যথাসম্ভব সহযোগিতা করা হবে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২ | সময়: ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ