সর্বশেষ সংবাদ :

পতিত জমিতে সজিনা চাষ

মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাইয়ে সজিনার গাছগুলোতে এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অনাবাদি ও পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আঁশজাতিয় সবজি সজিনার ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে গেছে। এরমধ্যে কোন কোন সজিনার গাছে গাছে ছোট ছোট সজিনা বের হচ্ছে। তবে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সজিনার বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার কৃষকরা।
সরেজমিনে ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ওই ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে অকৃষি বা পতিত জমিতে বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারোমাসি সজিনার চাষ হচ্ছে ৫ হেক্টর এবং দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে ১৫ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে, বাসাবাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে, স্কুল-কলেজ মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আঁশজাতিয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছগুলোতে এখন ফুলের শোভা পাচ্ছে। আর ওই সব ফুলের মৌ মৌ গন্ধে এলাকায় ভরে গেছে।
উপজেলাতে প্রতিবছরে সাজনা চাষ বেড়েই যাচ্ছে আর এখান কার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। তাছাড়া সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবে সচ্ছল হয়েছে। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরি ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, প্রাকৃতির কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষীরা।
উপজেলার ইটাইল গ্রামের হেলাল ও বিয়ালা গ্রামের সুজাউল জানান, তাদের বাড়ীর সমনে পতিত জমিতে প্রায় ১৫টি সজিনার গাছ আছে। গতবছরে ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ১৩ মণ সজিনা পেয়েছিলেন। আশা করছেন, এবারও তাদের সজিনার বাম্পার ফলন পাবেন।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মাহমুদুর রহমান রিয়াদ বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর একটি সবজি। ভিটামিন এ এর অভাব দূরীকরণে সজিনা অত্যন্ত উপযোগী একটি খাবার। এটি প্যারালাইসিস রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে থাকে। সজিনার মধ্যে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক ও সি আছে। এটি মানব দেহের কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের অনেক উপকারী। তাছাড়া সজিনার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়।
কালাই উপজেলার কৃষি অফিসার নীলিমা জাহান বলেন বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব সবজি। এটি অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। এটি রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও তেমন নেই। তবে, একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যাবে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২ | সময়: ৬:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ