পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই পাকিস্তানে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের নিয়মিতদের মধ্যে দুয়েকজনের পাকিস্তান সফর থেকে সরে যাওয়ার আভাস মিলেছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কেউ তা করেনি। তাই পূর্ণ শক্তির টেস্ট দলই সাজাতে পেরেছে দলটি। সবশেষ অ্যাশেজ দলের সবাইকেই পাচ্ছে তারা। অস্ট্রেলিয়া সবশেষ পাকিস্তান সফর করেছিল ১৯৯৮ সালে, মার্ক টেইলরের নেতৃত্বে। দেশটিতে দুই যুগ পরের এই মিশনের জন্য মঙ্গলবার ১৮ জনের টেস্ট দল দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
ঘরের মাঠে গত অ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে ৪-০ তে গুঁড়িয়ে দেওয়া দলের সঙ্গে নতুন সংযোজন কেবল একজন, অ্যাশটন অ্যাগার। উপমহাদেশের কন্ডিশন মাথায় রেখে স্পিন বিভাগের শক্তি বাড়াতেই মূলত বাঁহাতি এই স্পিনারকে দলে রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও দুই স্পিনার হলেন ন্যাথান লায়ন ও মিচেল সোয়েপসন।
২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেক হওয়া অ্যাগার এখন পর্যন্ত এই সংস্করণে কেবল ৪ ম্যাচ খেলেছেন। ৯ উইকেটের সঙ্গে ব্যাট হাতে এক ফিফটিতে করেছেন ১৯৫ রান। সাদা পোশাকে ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সবশেষ খেলেছেন ২০১৭ সালে, বাংলাদেশ সফরে। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার বছর পর আবারও লাল বলে খেলার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি।
সীমিত ওভার ক্রিকেটের কমিটমেন্টের কারণে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খুব বেশি খেলার সুযোগ পান না অ্যাগার। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত খেলতে পেরেছেন কেবল একটি ম্যাচ। এই সংস্করণে ৬১ ম্যাচ খেলে তার শিকার ১৫৪ উইকেট, তিন সেঞ্চুরিতে রান করেছেন ২ হাজার ১৬৬।
অ্যাশেজে প্রথম ম্যাচ খেলার পর সাইড স্ট্রেইন চোটের কারণে সিরিজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে পড়েছিলেন জশ হেইজেলউড। সুস্থ হয়ে অভিজ্ঞ এই পেসার ফিরেছেন দলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগামী শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলেও আছেন তিনি। ইংলিশদের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজে অভিষেকে রেকর্ডগড়া বোলিং করা স্কট বোল্যান্ড দলে জায়গা ধরে রেখেছেন। ওই সিরিজের শেষ টেস্টে একাদশে জায়গা হারানো মার্কাস হ্যারিসও যাচ্ছেন পাকিস্তানে।
ব্যাকআপ পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মিচেল মার্শ ও কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে আছেন জশ ইংলিস। অ্যাশেজ সিরিজের দলে থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি এই দুইজনের। ওই সিরিজে একটি ম্যাচ খেলা পেসার মাইকেল নিসারও টিকে গেছেন। অ্যাশেজে খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে নেই কেবল জাই রিচার্ডসন। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে পাকিস্তান সফরে এই পেসারের না যাওয়া আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল।
গত শনিবার অস্ট্রেলিয়া প্রধান কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার। নতুন কোচ নিয়োগের আগ পর্যন্ত অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড অন্তর্র্বতীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন। প্রায় তিন বছর পর দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৯ সালে খেলেছিল তারা ইংল্যান্ডে। পাকিস্তান সিরিজটি অস্ট্রেলিয়ার কিছু ক্রিকেটারকে দিবে নতুন অভিজ্ঞতা। হ্যারিস ও ক্যামেরন গ্রিন এখন পর্যন্ত এশিয়ায় কোনো প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলেননি। আর গ্রিনের তো এটা প্রথম দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ।
অ্যালেক্স কেয়ারি কেবল একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন এশিয়ায়, অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে ভারতের মাটিতে। যদিও উপমহাদেশে সাদা বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা আছে এই কিপার-ব্যাটসম্যানের। আর মার্নাস লাবুশেন ও ট্রাভিস হেড এর আগে ২০১৮ সালে কেবল একটি টেস্ট খেলেছেন এশিয়ায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে পৌঁছাবে অস্ট্রেলিয়া। দুই দলের লড়াই শুরু ৪ মার্চ, রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট দিয়ে। লাল বলের পরের দুই ম্যাচ শুরু ১২ মার্চ করাচিতে ও ২১ মার্চ লাহোরে। সিরিজটি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। তিন ওয়ানডের প্রথমটি হবে ২৯ মার্চ। পরের দুটি যথাক্রমে ৩১ মার্চ ও ২ এপ্রিল। এই তিন ম্যাচ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ।
একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি হবে ৫ এপ্রিল। সীমিত ওভারের চারটি ম্যাচই হবে রাওয়ালপিন্ডিতে। সাদা বলের সিরিজের জন্য এখনও দল দেয়নি অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দল: প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাশটন অ্যাগার, স্কট বোল্যান্ড, অ্যালেক্স কেয়ারি, ক্যামেরন গ্রিন, মার্কাস হ্যারিস, জশ হেইজেলউড, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, উসমান খাওয়াজা, মার্নাস লাবুশেন, ন্যাথান লায়ন, মিচেল মার্শ, মাইকেল নিসার, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মিচেল সোয়েপসন, ডেভিড ওয়ার্নার।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২ | সময়: ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর