করোনায় এক দিনে শনাক্ত ৬৬৭৬ জন, হার বেড়ে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশ

সানশাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আর শনাক্তের হারে বাংলাদেশ ফিরে গেল পাঁচ মাস আগের পর্যায়ে। সোমবার একদিনেই রোগী বেড়েছে প্রায় দেড় হাজার, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। শনাক্তের হারও ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে ৩১ হাজার ৯৮০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬ হাজার ৬৭৬ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। রোববার ২৯ হাজার ৩০৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫ হাজার ২২২ রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১৮ অগাস্ট, সেদিন ৭ হাজার ২৪৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
সোমবার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৮৮ শতাংশে, গত বছরের যা ১৩ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ। সেদিন শানাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৭ জনে। গত এক দিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু হওয়ায় মহামারীতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ১৫৪ জনে দাঁড়াল।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৪২৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৩২০ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার ৯১৩ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজার ৬৭৪ জন।
মহামারীর বছর গড়ানোর পর ডেল্টার দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর সংক্রমণের হার কমতে কমতে তলানিতে ঠেকে। এখন আবার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ১ জানুয়ারি যেখানে ৩৭০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর এসেছিল, ৬ জানুয়ারি তা এক হাজার ছাড়িয়ে যায়। চার দিনের মাথায় ১০ জানুয়ারি তা দুই হাজার এবং এরপর তিন দিনের মাথায় ১৩ জানুয়ারি তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। সোমবার তা দ্বিগুণ হয়ে গেল।
মহামারীর মধ্যে মোট শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৪ হাজার ৯৯২ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭৪ শতাংশের বেশি। দেশের তিন জেলায় এদিন কোনো নতুন রোগী শনাক্ত হয়নি। গত এক দিনে যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৪ জন পুরুষ, ৬ জন নারী। তাদের মধ্যে ৭ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের। ২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের ও ১ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১২ জানুয়ারি তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩২ কোটি ৮২ লাখের বেশি রোগী।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২২ | সময়: ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ