নাটোরে গণ ধর্ষণের শিকার ছাত্রী, গ্রেপ্তার ৫

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর: নাটোরে নতুন পোষাক না পেয়ে মায়ের সাথে অভিমান করে নাুনর বাড়ির উদ্দেশ্যে বাড়িছাড়া এক মাদরাসা ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে ৮ যুবক। ধর্ষকদের পাঁচ জনকে আটক করেছে নাটোর থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ।
জড়িত অপর তিন জনকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে দাখিল পরীক্ষার্থী ঐ মাদরাসা ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে আট যুবকের বিরুদ্ধে নাটোর থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম মাধনগর গ্রামের দিন মুজুর কন্যা দশম শ্রেণী পড়ুয়া এক মাদরাসা ছাত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদরাসা থেকে ফিরে নতুন পোষাকের জন্য মায়ের সাথে বায়না ধরে। মা নতুন পোষাক দিতে পারবে না জানালে তার সাথে বির্তকের এক পর্যায়ে সে নাটোর সদরের আগদিঘা গ্রামে নানির বাড়ি যাবে বলে অভিমান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে এ সময় তার সাথে নানা বাড়ি এলাকার মাঝদিঘা পূর্বপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে শহিদুল ইসলাম মেয়েটিকে নিয়ে সন্দেহজনক ভাবে এলাকায় ঘুরাঘুরি করতে থাকে। বিষয়টি এলাকার অনেকের নজরে আসে। এ সময় স্থানীয় ছাতনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি দুলাল সরকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মহসিন আলীকে মেয়েটিকে উদ্ধার করার জন্য বলেন। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের আর পাওয়া যায়নি।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে পুলিশের নজরে আনে এলাকাবাসী। সঙ্গে সঙ্গে নাটোরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে নাটোর থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ। রাত দুইটার দিকে স্থানীয় একটি লেবু বাগানে গণধর্ষণের সময় মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এসময় আট ধর্ষণকারীর মধ্যে ছাতনী গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৮), মাঝদিঘা পূর্বপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে শহিদুল ইসলাম(২৪), ছাতনী দিয়ারপাড়া গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে কাজল (২৫), জলিল মন্ডলের ছেলে আমিনুর (৪৫), মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে আস্তুল হোসেনকে (৩৮) আটক করেছে।
পলাতক অপর তিনজন ছাতনী দিয়াড়পাড়ার অভি মন্ডলেরর ছেলে লিটন (২৩), মিনু শেখের ছেলে নয়ন শেখ (২৫) ও দিলদার হোসেনের ছেলে রাজু (২৫)। তাদের আটক করতে অভিযান চলছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা শুক্রবার দুপুরে তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, পলাতক তিন অভিযুক্তকে দ্রুত আটকের সব ধরনের প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ঐ মাদরাসা ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানায়, পূর্ব পরিচয় নয়, সন্ধ্যা সোয়া ৭টার মেয়েটি মাঝদিঘা গ্রামে পৌছে অন্ধকারে রাস্তা হারিয়ে ফেললে আটক শহিদুল ইসলামের সাথে পরিচয় হয়।
শহিদুল ইসলাম মেয়েটিকে ভুলভাল বুঝিয়ে তার নানির বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এদিক সেদিক নিয়ে যায়। পরে পথে অন্য অভিযুক্তদের নজরে পড়লে ভাটপাড়া শ্মশানঘাটের মাঝামাঝি এলাকায় জহির মন্ডলের লেবু বাগানে নিয়ে গিয়ে তারা সবাই মিলে তাকে ধর্ষণ করে। নাটোর সদর হাসপাতালে ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২২ | সময়: ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ