সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় পাঁচদিনে ১৫ হাজার শিক্ষার্থী নিলো টিকা

নুরুজ্জামান, বাঘা: করোনার টিকা না নিলে কোন শিক্ষার্থী ক্লাসে যেতে পারবে না। শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে এমন ঘোষনার পর সারাদেশে করোনা টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের হিড়িক পড়েছে। এ দিক থেকে রাজশাহীর বাঘায় লক্ষ করা গেছে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। গত পাঁচ দিনে এ উপজেলায় টিকা পেয়েছে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা. আবু রাশেদ আহাম্মেদ ।
১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে করোনার টিকা নেয়া বাধ্যতা মূলক। টিকা গ্রহণ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী শ্রেণী কক্ষে অংশ নিতে পারবে না। গত শনিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এক আদেশে এ কথা বলেন। এতে বলা হয়, করোনার প্রাদুর্ভাবে দেড় বছর বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ খোলা হয়। বর্তমানে এর পাদুরভাব বেড়ে যাওয়ায় ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে করোনার টিকা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে ।
এদিকে রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকার কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে ১২ থেকে ১৮ বছরের সকল শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান টিকা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনে শিক্ষার্থীদের টিকাকেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। একই সঙ্গে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষককেও টিকাকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। টিকা গ্রহণ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না।
এ ছাড়াও টিকা কার্যক্রম চলমান অবস্থায় সবকটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অঞ্চল, জেলা শিক্ষা কার্যালয়, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকবেন।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে করোনার টিকা ছাড়া স্কুল পরিচালনা নয় এমনটি ঘোষণা এসেছে। ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কার্যক্রম চালু হয়েছে।
এদিক থেকে বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে গত রবিবার থেকে টিকা কার্যক্রম চালু রয়েছে। সেখানে গত পাঁচদিনে (ফাইজার) টিকা পেয়েছে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছেন, এই কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা টিকা নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারা বিশ্বে সবশেষ পরিসংখ্যানে ২১ কোটির বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আর মারা গেছেন ৪৪ লাখের বেশি মানুষ। এ দিক থেকে বাংলাদেশ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চৌদ্দ লক্ষাধিক এর ও বেশি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে উদ্ভূত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক টিকা প্রদান শুরু হয় ২০২০ সালের শেষের দিকে। উন্নত বিশ্বে টিকা প্রদানের হার আশানুরূপ হলেও উন্নয়নশীল গরিবদেশ গুলোতে টিকা প্রদানের হার হতাশাজনক। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় এসেছে করোনায় তৃতীয় ডোজ ‘বুস্টার শট’ প্রসঙ্গ। গত রবি ও সোমবার থেকে সারাদেশ জুড়ে প্রদান করা হচ্ছে এই টিকা কার্যক্রম।
এদিকে থেকে রাজশাহীর বাঘায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া অত্যান্ত শান্তি শৃংখলার মধ্য দিয়ে চলছে টিকা প্রদান কার্যক্রম। এর আগে উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌর সভায় পৃথক-পৃথক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে টিকা প্রদান করা হয়। সেখানে বেশি বয়স্ক (বৃদ্ধাদের) অগ্রাধিকার দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডা. আবু রাশেদ আহাম্মেদ।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২২ | সময়: ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর