সর্বশেষ সংবাদ :

বার্ণ ইউনিটে কাৎরাচ্ছেন দগ্ধ ফাতেমা, ধরা পড়েনি স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার : স্বামীর দেওয়া আগুনে শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে স্কুলশিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনের (৩৭)। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্বাসনালীও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে তাকে।
ফাতেমা খাতুন মহানগরীর মহিষবাথান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা এবং দুই সন্তানের মা।
এদিকে এ ঘটনার দুই দিন পার হয়ে গেলেও এখনও তার অভিযুক্ত স্বামী সাদিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। পুলিশ বলছে তাকে গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় সাদিকুল ইসলামকে একমাত্র আসামি করে নামে মামলা করেছেন- ফাতেমার ভাই আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাতে মহানগরীর রাজপাড়া থানায় এই মামলা করেন তিনি। মামলায় স্কুলশিক্ষিকা ফাতেমা খাতুনকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামি সাদিকুল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে। তার বাড়ি মহানগরীর বুলনপুর ঘোষপাড়া এলাকায়।
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকেই সাদিকুল ইসলাম পলাতক। তবে তাকে গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। আশাকরি শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এদিকে রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, ফাতেমার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। কেরোসিনের আগুনে তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। আগুনে তার মুখ, বুক ও দুই হাত বেশি পুড়েছে। এছাড়া তার শ্বাসনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য তাকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ৫ জানুয়ারি দিনগত রাত ১টার দিকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফাতেমার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান সাদিকুল ইসলাম। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগ থেকে তাকে বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
আগ্নিদগ্ধ স্কুলশিক্ষিকার ছোট বোন নূরজাহান খাতুন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তার বোনের স্বামী। ২০ বছর আগে বিয়ে হয় তাদের। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আপাকে নির্যাতন করতেন সাদিকুল ইসলাম। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক চাপ এবং লোকলজ্জার কারণে এতদিন বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন আপা। এর সঙ্গে জড়িয়ে ছিল তাদের ঘরে দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ। তাই এতদিন সব নির্যাতন মুখ বুজেই সহ্য করে এতদিন সংসারজীবন চালিয়ে আসছিলেন আপা।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২ | সময়: ৭:০৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ