
স্টাফ রিপোর্টার : প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ওয়ারিশ থেকে নিজের বোনকে বাদ দিয়ে পৈত্রিক সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে অপর দুই সহোদরের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শাহনাজ কাশেম। অভিযুক্ত দুই জন হলেন, ডা. ইকবাল কাশেম এবং ডা. নাসরীন ইয়াসমিন।
অভিযুক্ত দুই ভাই-বোন সেই জাল ওয়ারিশন দেখিয়ে সাকশেসন সার্টিফিটেক নিয়ে পিতার নামে বরাদ্দকৃত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) মূল্যবান প্লট, প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের শেয়ারসহ ব্যাংকে থাকা নগদ অর্থ এবং রাজশাহী নগরীতে ও ঢাকায় থাকা অন্যান্য সম্পদের একটি বড় অংশ এরই মধ্যে নিজেদের নামে করে নিয়েছে। বিষয়টি অবগত হবার পর বঞ্চিত সন্তান হিসেবে শাহনাজ কাশেম ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতারক দুই ভাই-বোনের নামে আদালতে মামলা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানাধীন রাজপাড়া এলাকার ডা. আবুল কাশেমের তিন সন্তান যথাক্রমে শাহনাজ কাশেম, ডা. ইকবাল কাশেম এবং ডা. নাসরীন ইয়াসমিন। ২০০৮ সালে তাদের পিতা আবুল কাশেম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর পর ২০০৯ সালে বড় বোন শাহনাজ কাশেমকে বাদ দিয়ে নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস থেকে শুধুমাত্র ডা. ইকবাল কাশেম এবং নাসরীন ইয়াসমিন নিজেদেরকে পিতা ডা. আবুল কাশেম ও মাতা নূরমহল খাতুনের সন্তান দেখিয়ে জাল ওয়ারিশন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন। এর পর ২০২০ সালের আগস্ট মাসে আবারো একই ভাবে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট করাতে গেলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরের নজরে আসে এবং তিনি ভুক্তভোগী শাহনাজ কাশেমের স্বামীকে অবগত করেন। এর পর শাহনাজ কাশেম জানতে পারেন তার নাম বাদ দিয়ে জাল ওয়ারিশন সার্টিফিকেট তৈরি করে অপর দুই ভাই-বোন তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তাকে বঞ্চিত করে সম্পত্তির অধিকাংশ অংশ হাতিয়ে নিয়েছেন।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব পরে রাজপাড়া থানার ওপর। থানার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত ডা. ইকবাল কাশেম এবং ডা. নাসরীন ইয়াসমিন তথ্য গোপন করে জাল ওয়ারিশন তৈরি করেছেন।
৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামরুজ্জামান জানান, ডা. ইকবাল কাশেম এবং ডা. নাসরীন ইয়াসমিনকে যে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে এবং এবিষয়ে নোটিশ করা হয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত ডা. ইকবাল কাশেম জাল ওয়ারিশনের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এবিষয়ে একটি মামলা করেছেন তাদের বোন শাহনাজ কাশেম। শাহনাজ কাশেমের প্রাপ্য অংশ বুঝিয়ে দিতে তারা আলোচনা করছেন বলেও জানান অভিযুক্ত ডা. ইকবাল। ভুক্তভোগী শাহনাজ কাশেম বলেন, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালত তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে। এর পর ইকবাল কাশেম জামিন নেয় এবং আমাকে বিভিন্ন ভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।
সানশাইন/১৭ ফেব্রুয়ারি/রনি