সানশাইন ডেস্ক : বায়ান্নর ফেব্রুয়ারির উত্তাল সেই দিনগুলো। রাজপথে উত্তাল মিছিলে ছাত্র জনতা কণ্ঠে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। এই আন্দোলনে পাকিস্তান বাহিনীর বুলেটবিদ্ধ রফিক শফিক জব্বারসহ নাম জানা অজানা অনেক শহীদ হন। বুলেটের প্রতিবাদে শাণিত কণ্ঠে সেদিন গেয়ে উঠেছিলেন গণসঙ্গীত শিল্পী আবদুল লতিফ গেয়েছিলেন ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়!’ এই কালজয়ী গান এখনও মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন ও আহমদ রফিক রচিত ‘ভাষা আন্দোলন ইতিহাস ও তাৎপর্য’ গ্রন্থে লিখেছেন, একাধিক ভাষা বা সম্প্রদায় অধ্যুষিত দেশ বিশেষ কোন সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক স্বার্থের অসম বিকাশ, তা কোন কারণেই হোক না কেন, অনুন্নত সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়া না করে পারে না। আর সেই প্রতিক্রিয়ার টানে ওই জাতি বা সম্প্রদায় সেই অসমতা দূর করার বা তাদের অবস্থা পরিবর্তনের ইচ্ছায় যে কোন রাজনৈতিক পন্থা গ্রহণ করতে পারে। বাংলাভাষার সঙ্গে বাঙালী মুসলমানদের শেকড় ছোঁয়া সম্পর্কের বিষয়টি প্রাসঙ্গিকভাবেই এখানে বিবেচনায় আসে। কিন্তু বাঙালী মুসলমানদের শিক্ষিত অংশ বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। উর্দুকে তারা চেয়েছিলেন মাতৃভাষা ও জাতীয় ভাষা হিসেবে। বাংলা উর্দু আরবির মধ্য থেকে বাঙালী জাতি তাদের আত্মঅন্বে^ষণ শুরু করেন। কায়দ আযম জিন্নাহ যখন ঢাকা সফরে এসেছিলেন তখন তার এই সফর শুধু সফরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা। তিনি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিলেন। সেদিন তার বক্তৃতায় তিনটি কথা উল্লেখ করেন। উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, কম্যুনিস্ট ও বিদেশী চরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্ররক্ষার প্রয়োজনে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যটি হলো লীগের বিরুদ্ধে চরম হুঁশিয়ারি। এসব কথা বলে তিনি গণতন্ত্রের কবর রচনা করে চলে গেলেন।
অহংকারের একুশে
ফেব্রুয়ারি ০৩
০৪:৪৬
২০২১