
স্টাফ রিপোর্টার : দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হবার পর কাটাখালী পৌরসভা এলাকার উন্নয়নে কাজ শুরু করে দিয়েছেন মেয়র আব্বাস আলী। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং স্থানীয় জনগণের চাহিদা মাথায় রেখে গুরুত্বের ভিত্তিতে তিনি এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছেন। এমনকি যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষার্থে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে খেলার মাঠ তৈরি ও ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় জোড় দিয়েছেন। আর ক্লিন কাটাখালী, গ্রিন কাটাখালী নির্মাণসহ সব উদ্যোগ ধারাবাহিক ভাবে সফল করতে মেয়র স্থানীয় সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
গত বছর ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ের পর এবছর ২০ জানুয়ারি তিনি নতুন করে শপথ গ্রহণ করেন। এর পর দ্বিতীয় দফায় মেয়র হিসেবে কাটাখালী পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন আব্বাস আলী। আব্বাসের হাত ধরেই জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত কাটাখালী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা পায়। সেই সাথে কাটাখালী পৌরসভার উন্নয়নেও গতি আসে। তার নেতৃত্বেই কাটাখালী পৌরসভা ‘সি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত হয়।
সূত্র মতে, কাটাখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এতদিন পৌরবাসীর সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত কোনো স্থান ছিলো না। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর হাট-বাজারে সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় তিনি প্রথমেই এলাকায় একটি জায়গা লীজ নিয়েছেন। ভাগাড়ের জন্য মাসকাটাদীঘিতে নেয়া ওই জায়গায় পৌরবাসীর সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে ফেলা হবে এবং সেই ময়লা-আবর্জনা সংরক্ষণ করে পরবর্তিতে প্রয়োজনে প্রক্রিয়াজত করা হবে। এসব ময়লা-আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে গ্যাস উৎপাদন সহ প্লাস্টিক বর্জ্য বাছাই করে পুনরায় তা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে পৌরসভার। আর এসব আবর্জনাকে সম্পদে পরিণতা করে তা থেকে পৌরসভা আয় করবে। কাটাখালী বাজার স্থানীয় পৌরবাসীসহ আশপাশের এলাকার মানুষের জন্য গুরুত্ব বহন করে। সরেজমিনে দেখা যায়, কাটাখালী বাজারকে আধুনিকায়ন, দৃষ্টিনন্দন ও পরিপাটি বাজারে পরিনত করার কাজও শুরু হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে মেয়র আব্বাস আলী বলেন, ‘কাটাখালী বাজার সহ কাটাখালী বাজারের চারপাশে ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করা এবং দুর্গন্ধমুক্ত করার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। সাধারণ দিনমজুররা এই কাজ করতে অস্বীকার করায় সুইপারদের দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। পৌরবাসীর সন্তানদের জন্য সুন্দর, মনোরম ও পরিচ্ছন্ন কাটাখালী (ক্লিন কাটাখালী, গ্রিন কাটাখালী) তৈরি করে দিয়ে যেতে চাই। পর্যায়ক্রমে সকল ওয়ার্ডে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলবে ইনশাআল্লাহ। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’
এবারের নির্বাচনী ইসতেহারে তিনি জানিয়েছিলেন কাটাখালী পৌরসভায় জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি কাজ করবেন। কথামতো তিনি দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হয়েই কাটাখালী বাজার থেকে বেলঘরিয়া পর্যন্ত ক্যনেলটির সুরক্ষা দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে ছেন। এই কাজ শেষ হলে পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। যা এই ক্যানেলের সাখে সংযুক্ত করা হবে। আর এর মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি পূর্ণ হেব।
এবিষয়ে তিনি জানান, কাটাখালী ক্যানেলের (কাটাখালী বাজারের ভিতর দিয়ে যাওয়া মূল ক্যানেল) প্রোটেকশন ওয়ালের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আশা করছি কাটাখালী থেকে বেলঘরিয়া রোডের, হরিয়ান রোডের, ইউসুফপুর ইউনিয়নের জনসাধারণের, হরিয়ান ইউনিয়নের জনসাধারণের দীর্ঘদিন ধরে চলা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের লাঘব ঘটবে খুব তাড়াতাড়ি। পরিকল্পনা রয়েছে, কাটাখালী পৌরসভার সকল ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডের ড্রেন নির্মাণ করে কাটাখালী ক্যানেলের সাথে সংযোগ দেয়ার।
সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় রাজশাহী জেলার অন্যান্য এলাকার মতো কাটাখালী পৌরসভাতেও মাদকের প্রভাব রয়েছে। আর সেই মাদক থেকে যুবসমাজকে দূরে রাখতে পৌরএলাকায় খেলাধুলার প্রতি জোড় দিয়েছে মেয়র। এলক্ষে তিনি বন্ধ জুটমিলের খেলার মাঠকে সংস্কার করে সেখানে এলাকার যুব সমাজের জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছেন। এছাড়া ওই মাঠে তরুণ সমাজ যাতে নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারে সেই ব্যবস্থাও তিনি করে দিয়েছেন। আর এর সবই তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে করে যাচ্ছেন। এদিকে সম্প্রতি আরএমপির শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনারের কাছে মেয়র তার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের আবেদন করেছেন। মেয়রের দাবি এতে করে এলাকাবাসীর নিরাপত্তা বাড়বে। একই সাথে কাটাখালী এলাকায় বাইরের কেউ মাদক সেবন করতে আসলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে এলাকাবাসীর প্রতি মেয়র আহ্বান জানিয়েছেন।
মেয়র বলেন, মমতাময়ী মা জননী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমান প্রজন্মকে শারীরিক ভাবে সুস্থ্য রাখা এবং মাদক থেকে দুরে রাখার জন্য রাজশাহী জুটমিল মাঠ সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সাথে ছিলেন রাজশাহী জুটমিলের প্রকল্প প্রধানসহ উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ক্রিড়া সংগঠক, সাবেক কৃতি খেলোয়াড়বৃন্দসহ আগামী প্রজন্মের খেলোয়াড়বৃন্দ। খুব শিগগিরই কাটাখালী পৌরসভায় ওয়ার্ড ভিত্তিক ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, দাবা টুর্নামেন্টসহ সকল প্রকার খেলাধুলা শুরু করা হবে ইনশাআল্লাহ। এসব ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণের জন্য আগামী প্রজন্মের সকলকে প্রস্তুতি আহ্বান জানান মেয়র আব্বাস। তিনি জানান, এবার কাটাখালী হবে দেশের অন্য সকল পৌরসভার জন্য অনুকরণীয়।