রাবি প্রতিনিধি : একটি আমগাছ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশালাকৃতির বটগাছ। কাছে গেলেই কেবল ঘোর কাটবে। তিন বিঘা জমিজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সূর্যপুরী জাতের এই আমগাছের বিশালাকৃতি যেন কল্পনাকেও হার মানায়। ধারণা করা হয় বিস্তৃতির দিক দিয়ে এটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম। যার আনুমানিক উচ্চতা ৮০-৯০ ফুট। আর পরিধি ৩৫ ফুটের মতো। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী (নয়াপাড়া) গ্রামে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই আমগাছটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাছটি দেখার জন্য ভিতরে প্রবেশ করতে হলে প্রতিজন দর্শনার্থীকে ২০ টাকা মূল্যের টিকিট কাটতে হয়। টিকিটের টাকা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে দুটি পরিবার চলে ও গাছটির পরিচর্যা করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন দর্শনার্থী দেখতে আসেন এ গাছ। আমগাছ দেখিয়ে দৈনিক উপার্জন হয় এক হাজারের মতো টাকা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সম্মুখভাগে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বিশালাকার এই আমগাছটির ডালগুলো বেশ নজরকাড়া। নদীর ঢেউয়ের মতো জেঁকে বসেছে মাঠজুড়ে। একটু উপরে উঠে আবার নেমেছে মাটিতে। কান্ড থেকে বেরিয়েছে প্রায় ২০টি ডাল। ডালগুলোর আকারও মাঝারি আমগাছের মতো।
কথা হয় গাছটির বর্তমান মালিক নূর ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, গাছটির বয়স প্রায় ২০০ বছরেরও বেশি। এর বর্তমান মালিক নূর ইসলাম ও তার ভাই সাইদুর রহমান। গাছটি নূর ইসলামের পিতা কন্টু মোহাম্মদের দাদা রোপণ করেন। তবে তিনি জানেন না ওই ব্যক্তির নাম এবং ঠিক কবে গাছটির চারা রোপণ করা হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, ২০০ বছরের বেশি বয়স হলেও গাছটিতে প্রতি বছর প্রায় ৮০ মণের বেশি আম পাওয়া যায়। এগুলোর মূল্য বাজারের অন্যান্য আমের চেয়ে ঢের বেশি। আমের মৌসুমে গাছের পাশেই তা বিক্রি করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে, যেমন ঈদ, পূজা কিংবা পহেলা বৈশাখে শত শত দর্শনার্থী গাছটি দেখতে ভিড় জমায়। বিদেশী দর্শনার্থীরাও মাঝে মাঝে দেখতে আসে গাছটি। গাছটি ঘিরে পিকনিক স্পট গড়ে তোলার কথা ভাবছেন তারা।
উত্তরের শান্ত জনপদের সাক্ষী এই গাছটির শাখাগুলোতে বসে থাকা কিংবা হাঁটাচলা করা গেলেও গাছের সামনে নোটিসে লেখা, ‘গাছে ওঠা বা পাতা ছেঁড়া নিষেধ।’
তিনবিঘায় একটি আমগাছ
জানুয়ারি ৩০
০৫:৫৯
২০২১