স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সরকার ঘোষিত অসহায় ও অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অন্তর্ভূক্তি, স্বজনপ্রীতি ও উৎকোচের মাধ্যমে বাড়ি বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে কমিটির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিগত ১০ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে স্বাক্ষর করেন ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা।
জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলায় অসহায় ও অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে বাড়ি বরাদ্দের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু যাচাই-বাছাই তোয়াক্কা না নেই। স্বজনপ্রীতি ও উৎকোচের বিনিময়ের মাধ্যমে ওই কমিটি সরকারি বাড়ি বরাদ্দ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, যাচাই-বাছাই কমিটিতে একজন তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধা শ্রী অশোক কুমার চৌধুরীর নাম রয়েছেন। যিনি নিজেকে কখনও নিজেকে সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বা কখনও কমান্ডার পরিচয় দেন। কমিটিতে কথিত এই মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভূক্তি হওয়ায় কমিটির মান ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অশোক কুমার চৌধুরী আবাসন নির্মাণ কমিটির সদস্য বলে স্বগর্বে প্রচার করে। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে তার অনুগত দুই থেকে তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তিনি প্রকৃত অসহায় ও অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাদ দিয়ে যারা উৎকোচ দিয়েছেন কেবলমাত্র তাদেরই নাম চুড়ান্ত তালিকায় যুক্ত করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা চরম ক্ষোভের সাথে জানিয়েছেন, কথিত মুক্তিযোদ্ধা শ্রী অশোক কুমার চৌধুরীর বহু দুর্নীতির সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে। সরজমিনে পুনঃতদন্তের মাধ্যমে সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে বাড়ি বরাদ্দের তালিকা প্রনয়ণের দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধারা। সেই সাথে অশোক কুমার চৌধুরীর নামের আগে সংযুক্ত করা স্বঘাষিত পদবীগুলো রদের মাধ্যমে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সকল কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতির দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধারা।
এ ব্যাপারে গোদাগাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মুনিরুজ্জামান বলেন, সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগগুলো যথার্থ। অশোক কুমার চৌধুরী তার বিগত দূর্নীতিগুলো আড়াল করে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট কমিটিতেও সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য লবিং-গ্রুপিং করেছে। যা মোটেও মেনে নেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে আরেক সাবেক কমান্ডার মনিউর রহমান (মুন্টু) বলেন, যদি কর্তৃপক্ষ তার লবিং-গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে তাকে কমিটিতে সদস্য পদে বহাল করা হয়, তাহলে আমরা সমস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা আন্দোলনে যাব, মানববন্ধন করব। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটিতে অশোক কুমারকে মেনে নিব না।
Spread the love
জানুয়ারি ২৭
০৬:০৫
২০২১