নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের মৃদ্যু শৈতপ্রবাহ। ঘনকুয়াশার সঙ্গে হাড় কাপানো কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুররা। জেলার পত্নীতলা উপজেলার দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বড় চাঁদপুর ও পাটিচড়া গ্রাম আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। এ গ্রামগুলো ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির মানুষদের বসবাস।
প্রচন্ড এ শীতে পিছিয়ে পড়া এসব মানুষদের কাছে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে শীত নিবারনের জন্য কোন গরম কাপড় পৌঁছেনি। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ নওগাঁ উপকেন্দ্রের উদ্যোগে এসব সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া প্রায় ৩ শতাধিক মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরন করা হয়েছে।
এছাড়াও মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিধিগুলো মেনে চলায় উদ্বুদ্ধ করতে শীতবস্ত্রের সঙ্গে মাস্কও বিতরণ করা হয়। উন্নত জগৎ গঠন করুন এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে ১৯৪৮ সাল থেকে প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত এ সংগঠন সারাদেশব্যাপী নানা রকমের সামাজিক ও কল্যাণকর কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে নওগাঁয় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিজস্ব অর্থায়নে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির মাঝে এ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
বড়চাঁদপুর গ্রামের আদিবাসী জনেস, মংলা, শিবানী ও পাটিচড়া গ্রামের আদিবাসী শান্তি মুরমু, বাবুরামসহ অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন প্রচন্ড এ শীতে এখন পর্যন্ত আমাদেরকে কেউ একটি গরম কাপড় দেয়নি। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে কোন মতে শীত নিবারন করছি। আর গরম কাপড়ের অভাবে আমরা মাঠে কাজ করতে পারছি না। মাঠে কাজ না করলে আমাদের ভাগ্যে খাবার জোটে না। আজ এই বাবুরা নওগাঁ থেকে এসে আমাদেরকে কম্বল দিয়ে গেলো। আমরা খুব খুশি।
এ সময় ছিলেন নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার সাজেদুর রহমান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুল আলম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আরিফউজ্জামান খাঁন, শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার আবু সাইদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার প্রবীর কুমার পাল, নওগাঁ পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এএমএইচ সঙ্গি।
ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, বর্তমান সরকারের নানা উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠির মানুষদের জীবন মান আগের চেয়ে অনেটাই উন্নত হয়েছে। প্রচন্ড এ শীতে জনজীবন একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সমাজের খেটে খাওয়া ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষদের জীবন-যাপন অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাড়িয়েছে।
অনেক মানুষই গরম কাপড়ের অভাব নিয়েই দিন কাটাচ্ছে। তাই সরকারের পাশাপাশি সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছেন আমরা সবাই যদি এসব শীতার্ত মানুষদের পাশে একটু একটু করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই তাহলে আমাদের দেশে কোন মানুষকেই আর শীতে কষ্ট করতে হতো না।
নওগাঁয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ প্রকৌশলীদের
Spread the love
জানুয়ারি ২৭
০৫:৫০
২০২১