স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে ৩ দিনের কণ্যা শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিশু চুরির এ ঘটনা ঘটে। নবজাতকের মায়ের নাম শিল্পী (২৮)। তিনি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার বাসিন্দা। রামেকের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বেড থেকে অপরিচিত এক নারী নবজাতকটি চুরি করে নিয়ে যান।
রামেক পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মাহবুব ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর থেকেই বাচ্চাটির খোঁজ চলছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে থাকা সিসি ক্যামেরা চেক করে অপরাধী শনাক্তের ব্যবস্থা চলছে।
ওই ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক আফসানা খানম অনু জানান, কয়েকদিন যাবত এক নারী শিশুটির মায়ের কাছে ছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে হঠাৎ শুনি তিনি ওই বাচ্চাটিকে নিয়ে পালিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার ও রামেক প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন। এ বিষয়ে রামেক কর্তৃপক্ষ থানায় অবহিতও করেছেন।
নবজাতকের নানা জানান, শিল্পীর বাচ্চা হয়েছে তিন দিন আগে। সকাল ঘুম থেকে ওঠার পর নাস্তা করে সে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। এক ঘণ্টা পর উঠে দেখে বাচ্চা নেই। সকাল সাড়ে ৯টার দিকের ঘটনা এটি।
তিনি আরও জানান, তিন দিন ধরে এক অপরিচিত নারী আমাদের পাশেই ছিল। নগরীর তালাইমারি বাড়ি বলে জানায়। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওপর তলায় তার রোগি আছে বলে জানিয়েছিল সে। বিভিন্নভাবে আমাদের সঙ্গে আলাপ জোড়ে। কিন্তু আজ সকালে শিল্পী ঘুমিয়ে গেলে ওই নারী বাচ্চা নিয়ে পালিয়েছে।
কন্যা শিশুর বাবা মাসুম রবিদাস জানান, চলতি মাসের ২০ তারিখ তার স্ত্রীর সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। শিশুটির বয়স মাত্র ৩ দিন। ২৩নং ওয়ার্ডে তার স্ত্রী চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্ত্রীর সাথে তার শাশুড়ি, ভাবি ও অন্যান্য স্বজনরা ছিলেন। তবে তিনি বাইরে ছিলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রকাশ্য দিবালোকে তার কন্যা সন্তান চুরি হয়। পরে তাকে সন্তান চুরির বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানানো হয়।
রবিদাস আরো জানান, তার স্ত্রীর পাশের বেডে এক অপরিচিত নারী ছিল। এটিও তার কাজ হতে পারে। তাকে পাওয়া যাচ্ছেনা। এটি আমাদের প্রথম সন্তান। স্ত্রীকে কোনোভাবেই সান্তনা দেয়া যাচ্ছেনা। আমরা আমাদের সন্তানকে ফেরত চাই। হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে আনসার সদস্য ও গেটে আনসার সদস্যরা পাহারায় থাকে তাহলে কিভাবে তার সন্তানকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো? ছোট শিশু নিয়ে যেতে হলে শিশুর ছাড়পত্র গেটে দেখাতে হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরতদের অবহেলাও এর জন্য দায়ী। থানায় শিশু চুরির বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ওই শিশু জন্ম হওয়ার আগে থেকেই এক নারী তাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে বলে প্রাথমিকভাবে শুনেছি। তার কাজ কিনা বা কে ওই শিশুকে চুরি করে নিয়ে গেল তা সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি পুলিশকেও অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, থানায় অভিযোগ পেয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। শিশুটি উদ্ধারে কাজ শুরু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি নবজাতক চুরি হয়। ওই নবজাতকের বয়সও তিন দিন ছিল। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে।
রামেক হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি
Spread the love
জানুয়ারি ২৩
০৬:৫২
২০২১