সানশাইন ডেস্ক : আগামী ২০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসছে ভারতের উপহার স্বরূপ সেরামের ভ্যাকসিনের ২০ লাখ ডোজ। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সোমবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন আনার অনুমতিও দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এর আগে সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানান, এ মুহূর্তে গোটা স্বাস্থ্যখাতের ব্যস্ততা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনায়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নিজের বক্তব্যের শুরুতেই করোনাকালীন স্বাস্থ্যখাতে নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে নিজের পক্ষে সাফাই গান মন্ত্রী। জানান দুর্যোগ মোকাবিলার পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্যখাত, নেই শয্যা কিংবা আইসিইউ সংকট।
মন্ত্রী বলেন, সপ্তাখানেকের মধ্যেই দেশে আসছে ভারতের সেরাম থেকে নেওয়া অক্সফোর্ডের প্রথম ৫০ লাখের চালান। এর আগেই আসতে পারে ভারত সরকারারের উপহার হিসেবে দেওয়া কিছু ভ্যাকসিন। যদিও সেই টিকা কোন ব্র্যান্ড বা সংখ্যা কত তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় থাকছে বিশেষ নজরদারি। আমাদের ভারত সরকারও কিছু ভ্যাকসিন উপহারস্বরূপ দেবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এ টিকা দেওয়ার পর কী হবে, আমরা তা জানি না। আমরা অন্যান্য দেশে দেখেছি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। টিকার বুথগুলো হাসপাতালের কাছে থাকলে ভালো হয়।
তিনি জানান, ৪ লাখ মানুষের জন্য ফাইজারের ৮ লাখ ডোজ আসবে। এ ভ্যাকসিন সংরক্ষণে কোল্ড চেইন সীমিত আছে। মাইনাস ৭০ ডিগ্রি ভ্যাকসিন রাখার উপযোগী রেফ্রিজারেটর আনা হচ্ছে জাতিসংঘের সহায়তায়।
নীতিমালা মেনে প্রাইভেট সেক্টরে যেকোনো প্রতিষ্ঠান চাইলেই ভ্যাকসিন আনতে পারবে। তবে দামে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে বলেও জানান জাহিদ মালেক।
এদিকে, করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য ঢাকায় ৩০০টি কেন্দ্র করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান। আগামী ২৫-২৬ জানুয়ারি ভারত থেকে করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেকোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিনের সাইড ইফেক্ট (পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) থাকতে পারে। ওষুধের গায়ে লেখা থাকে, কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। আবার নাও হতে পারে। বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনেও হয়েছে। করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে জনসাধারণকে সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা আমরা দেবো। করোনা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেটা আছে, সেটি গুরুতর নয়। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম। এজন্য আমি মনে করি, জনগণকে প্রস্তুত থাকতে হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মেনে নিয়ে ভ্যাকসিন নিতে হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চার ডলার দামে সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে থেকে টিকা কিনছি। পরিবহন ও সংরক্ষণে যে এক ডলার খরচ, সেটাও দেওয়া হচ্ছে। আমাদের চুক্তি আছে যে, ভারত সরকার কম দামে কিনলে আমাদেরও কম দামে দেবে। বেশি দাম হলে আমরা নেবো না, আমরা কম দামেই নেবো।’
দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সাধুবাদ জানাই, তারা একটি ভ্যাকসিন ডেভেলপ করেছে। একটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত করতে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়, তাদের সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। আমাদের দেশীয় প্রোডাক্ট যদি মানসম্পন্ন হয়, আমরা সব সময় সেটি গ্রহণ করে থাকি। আমাদের কাছে যখন যে সাহায্য চাইবে, আমরা তাদের সাহায্য করবো।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÍডিআরইউ’র সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানসহ সংগঠনটির অন্য সদস্যরা।
২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে বুধবার
জানুয়ারি ১৯
০৬:১৪
২০২১