
মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: এক সময়ের অবহেলিত ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এখন উন্নয়নের পথে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবানীগঞ্জ পৌরবাসী নৌকায় ভোট দিয়ে পেয়েছে তাদের কাঙ্খিত উন্নয়ন। আর এ উন্নয়ন তরীর কান্ডারী হয়েছেন বর্তমান মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডল।
স্থানীয় পৌরবাসীরা জানান, বিগত ২০০০ সালে এ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে ছিল না কোন ভাল কোন রাস্তাঘাট, ঘরে ঘরে ছিল না বিদ্যুৎ। বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখানে উন্নয়নের জোয়ার বইতে শুরু করে। পরে ২০১৬ সালের পৌর নির্বাচনে পৌরবাসী বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেন বর্তমান মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডলকে। এরপর থেকে আলোকিত হওয়া শুরু করে পৌরসভা।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মালেক মন্ডল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে থেকে পর পার পাঁচটি অর্থ বছরে এখানে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সুসম্পন্ন হয় এবং আরো প্রায় ত্রিশ কোটির টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী লিটন মিয়া জানান, পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য গোটা পৌর এলাকায় ১৫০ টি ডিপ সিলিন্ডার ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৫টি সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
ভবানীগঞ্জ বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার জন্য একটি বিশাল আকারের আরসিসি শেড নির্মাণ করা হয়েছে যার খরচ হয়েছে ২৫ লক্ষ টাকা। এর পাশাপাশি ভবানীগঞ্জ বাজার ব্রীজ হতে সূর্যপাড়া বেইলী ব্রীজের সামনে ২ কি.মি পর্যন্ত নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
মেয়র মালেক মন্ডল বলেন, এ মেগা প্রকল্পটি শেষ হলে ভবানীঞ্জের সৌন্দর্য ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে। পরে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ডাক্তা ঈদগাহের সংস্কার করা হয়েছে, নির্মাণ করা হয়েছে কসবা নদীর উপর ব্রীজ এবং পৌরসভার সকল মসজিদ ও মন্দিরে স্থাপন করা হয়েছে সোলার প্যানেল।
এছাড়া ভবানীগঞ্জ শশ্মানের রাস্তা নির্মাণ ও ভবানীগঞ্জ গোডাউন মোড়ে এলাকায় দখলমুক্ত করা হয়েছে বেশকিছু সরকারি খাস জমি। একই অর্থ বছরে পৌর এলাকার ৫৩০ জন দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। বিধবা ভাতা দেওয়া হচ্ছে ৪১৩ জনকে, প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ২৪০ জন ও মাতৃত্বকালীন ভাতা পাচ্ছেন ৭৭৫ জন। এছাড়া এ পৌরসভায় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ৩০ হাজার দুস্তদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
চলতি বছরে করোনার মহামারি দেখা দিলে মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১০ টন চাল বিতরণ করেন এবং প্রায় দুই হাজার পরিবারে সরকারের বিভিন্ন সাহায্য পৌছে দেওয়া হয়। পরে চলতি বছরের শেষ সময়ে অসময়ে বন্যায় বাগমারার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়।
এ বন্যায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেন মালেক মন্ডল। তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের সদস্যদের কাছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুকনো খাবারসহ নগদ অর্থ সহায়ত করেন। এছাড়া বিগত প্রতিটি অর্থ বছরে প্রায় ১৮শ পরিবারের মাঝে চার মাস ধরে ১০ টাকা কেজি দরে চাল প্রদান করা হয়।
সবশেষ ভবানীগঞ্জ পৌরসভার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ। এছাড়া পৌরসভার প্রায় ৫ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে পৌরসভার উদ্যোগে। এছাড়া ঈদ ও পূজায় পৌরবাসীর মাঝে বস্ত্রসহ প্রত্যকে শীত মৌসুমে ৫ হাজার করে কম্বল বিতরণ করা হয়।
এসব উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বর্তমান মেয়র মালেক মন্ডল বলেন, আমি মাত্র পাঁচবছরে যতগুলো উন্নয়ন কাজ করেছি তা বিগত ১৫ বছরেও করতে পারেনি কোন মেয়র। তাই আমি আবারও নৌকার কান্ডারী হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন।
তাই আমি পৌরবাসীর কাছে তাই আবারও উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট প্রার্থান করছি। আমি আবারও মেয়র হতে পারলে এ পৌরসভায় ১শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করব ইনশাআল্লাহ।