রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলে এক অনাবাসিক ছাত্রকে হল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলটির প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনেছেন। প্রক্টরের বিরুদ্ধে ‘অনধিকার চর্চা ও অপব্যবহারের’ অভিযোগ এনে প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, অপরদিকে তার এ অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন প্রক্টর।
সোমবার দুপুুরে মতিহার হলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রক্টরের বিরুদ্ধে ‘অনধিকার চর্চা ও অপব্যবহারের’ অভিযোগ এনে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মু. আলী আসগর পদত্যাগের কথা জানান। অপরদিকে একই দিন বিকেল ৪টায় প্রাধ্যক্ষের এ অভিযোগকে ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ দাবি করে পৃথক এক সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাধ্যক্ষ আলী আসগর অভিযোগ করেন, হল প্রশাসন কর্তৃক ১২০ নং কক্ষে আবাসিকতা প্রাপ্ত ছাত্রকে বিতাড়িত করে তার স্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের জনি মিয়া নামের একজন শিক্ষার্থী অবস্থান করছিলেন। তাকে হল থেকে নামিয়ে দিয়ে আবাসিকতাপ্রাপ্ত ছাত্রকে তুলে দেয়া হলে প্রক্টর তার ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে সেই শিক্ষার্থীকে আবার ১২০ নম্বর কক্ষে তুলিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ‘প্রক্টর মহোদয়ের অনধিকার চর্চা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে আবাসিক ছাত্রকে হল থেকে বিতাড়িত করে তার পরিবর্তে অনাবাসিক ছাত্রের অবস্থানের ব্যবস্থা করা আমার পক্ষে নৈতিকভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে আমি আজ (সোমবার) অপরাহ্নে মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।’
এদিকে প্রাধ্যক্ষের অভিযোগ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। আমি কোনো শিক্ষার্থীকে হলে তুলে দেইনি। হলে কাকে সিট দেয়া হবে না হবে সেটা প্রাধ্যক্ষের বিষয়।’
প্রক্টর আরো বলেন, ‘গত ১ তারিখ শিক্ষার্থীরা যখন হল গেট অবরোধ করেছিল, তখন আমি আর সহকারি প্রক্টররা হলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। হলে গিয়ে প্রাধ্যক্ষকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিফ করেননি। শুধু তাই নয়, সেদিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে আমার কোনো ধরণের যোগাযোগ হয়নি। অথচ তিনি আমার সঙ্গে কোনো কথা না বলেই আমার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন।’
গত শুক্রবার ছাত্রলীগের তুলে দেওয়া প্রথম বর্ষের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে বের করে দেন হল প্রশাসন। পরে সেদিন হল গেইটে তালা দিয়ে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তারপর থেকেই শুরু হয় এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এম এ বারী বলেন, ‘পদত্যাগপত্রের কপি এখনো হাতে পাইনি।’
রাবিতে প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ
Spread the love
ফেব্রুয়ারি ০৫
০৩:২৭
২০১৯