
রাবি প্রতিনিধি: অর্থাভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী সামিরের চিকিৎসা হচ্ছে না। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন এক লাখ টাকা। কিন্তু দিনমজুর বাবার পক্ষে এই টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যসব তরুণদের মতো তারও ইচ্ছা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও লেখাপড়া করে বড় কিছু করার। কিন্তু দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছেন ছয় বছর আগে কেড়ে নিয়েছে তার সব স্বপ্ন।
সামিরের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায়। ভোরনিয়াদিহট গ্রামের দিনমজুর সাইফুল ইসলামের সন্তান সে। তার পড়ালেখার খরচ চলে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে পাওয়া বৃত্তির টাকায়। ঠাকুরগাঁও থেকেই ২০১৬ সালে এসএসসি ও ২০১৮ সালে এইচএসসি পাশ করে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন সামির।
ছয় বছর আগে দুর্ঘটনায় পা হারানো পর থেকে কৃত্রিম পা দিয়েই চলছে তার জীবন। এতেও সমাধান হয়নি। যোগ হয়েছে আরেক বিপত্তি। প্রতি তিনবছর অন্তর সেই কৃত্রিম পায়ের কার্যকারীতা নষ্ট হয়ে যায়। এক লাখ টাকা খরচ করে কিনতে হয় নতুন কৃত্রিম পা।
পারিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় সামিরের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব ছিলো না তার বাবার। তাই ছোট থেকেই টিউশানি আর অন্যের জমিতে কাজ করতেন সামির। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন জমিতে কাজ করতে গিয়ে ট্রাক্টরের চাকার নিচে পড়ে বাম পা হারান তিনি। বিভিন্নজনের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে শরীরে কৃত্রিম পা সংযোজন করান।
রাজশাহীর সেন্টার ফর দি রিহ্যাবিলিটেশন অব দি প্যারালাইজডের এস এম ইমরান শোয়েবের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন সামির। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) চিকিৎসক দ্রুত নতুন কৃত্রিম পা সংযোজনের জন্য বলেন। কিন্তু অর্থাভাবে কৃত্রিম পা কিনতে পারছেন না তিনি।
সামির বলেন, ‘বাবা টাকা দিতে পারতো না বলে অন্যের জমিতে কাজ করতাম। দুর্ঘটনার পর থেকে বিভিন্নজনের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত এসেছি। বর্তমানে যেই কৃত্রিম পাটি আছে সেটির কর্মক্ষমতা নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে চলতে। ডাক্তার দ্রুত নতুন পা লাগাতে বলেছেন।’
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হান্নান বলেন, ‘সামিরের বিষয়টি নিয়ে বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় তোলা হবে। এরপর যতটুকু সম্ভব আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।’
সামির সমাজের সহৃদয়বানদের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন। তাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা ডাচ বাংলা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর- ১৭২১০৫৫১৬১৪। এছাড়াও সামিরের নিজস্ব বিকাশ অ্যাকাউন্টে (০১৭৭৩৮৪৭৭৮১) টাকা পাঠানো যাবে।