স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা : রাজশাহী জেলা সদর থেকে ৪৫ কিলোমিটার পুর্ব দিকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে চিকিৎসার জন্য অপারেশান থেকে শুরু করে সব ধরণের যন্ত্রপাতি আছে। অথচ না করা হয় ছোট-খাটো অপারেশান কিংবা না করা হয় সিজার (প্রসূতি-ডেলিভারি)। কারণ এখানে নেই ভাল কোনো চিকিৎসক। এই মুহুর্তে কাগজে কলমে ১০ জন ডাক্তার থাকলেও বাস্তবে আছেন মাত্র তিনজন। ফলে প্রতিনিয়তই হয়রানীর শিকার হচ্ছেন রোগিরা।
সরেজমিন শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তার নেই। সেখানে কর্তব্যরত একজন বাদার জানান, স্যার ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছেন। এরপর সেখানে গিয়েও কোন ডাক্তার চোখে পড়েনি। বহির বিভাগে গিয়ে দেখা যায় রোগিরা টিকিট নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন একজন নারী হারবাল চিকিৎসকের রুমে। খোদ হিসাব রক্ষক তিনিও তখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগে উপস্থিত হননি।
বাঘা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার আক্তারুজ্জামান জানান, এখানে কাগজে কলমে ১০ জন ডাক্তারের নাম থাকলেও এই মুহুর্তে স্বাস্থ্য বিভাগের বড়কর্তা (টি.এইস.এ) ডা: সিরাজুল ইসলাম এবং (আরএমও) ডা: সঞ্জয় কুমার স্বাস্থ্য বিষায়ক ট্রেনিং-এ জেলা শহর রাজশাহীত অবস্থান করছেন। এছাড়াও ডাঃ শাওন, ডাঃ কাফি ও ডাঃ রুকসানা এই মুহুর্তে ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষার জন্য ঢাকায় রয়েছেন। অপর একজন চিকিৎসক ডা. রুকসানা কাগজে কলমে স্বাক্ষর থাকলেও তিনি কোন দায়িত্ব পালন না করে অসুস্থতার অজুহাতে রাজশাহীতে অবস্থান করছেন।
স্থানীয়রা জানান, এখানে ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হলেও প্রভাব খাটিয়ে তারা অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। এতে করে চরম বিড়ম্বনা ও হয়রানীর শিকার হতে হয় এই অঞ্চলের রোগিদের। মাঝে-মধ্যে দু’একজন ডাক্তারকে এখানে পোস্টিং দেয়া হলেও তারা হাসপাতালের কোয়াটারে থাকেন না।
অভিযোগ রয়েছে, এই স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক কোয়াটারে থাকেন অবসর নেয়া হিসাব রক্ষক, পুলিশ, বহিরাগত ব্যাক্তি এবং রান্নার দায়িত্বে নিয়োজিত একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা (টিএইসএ) ডা: সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখানে ৩১ শয্যার লোকবল দিয়ে ৫০ শয্যা হাসপাতাল চালাতে হয়। মাঝে মধ্যে বিশেষ কারণ বসত দু’একজন ডাক্তার না এলে নিরুপায় হয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়ে আসি। তিনি ডাক্তার সংকটের বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জনকে অবহিত করছেন বলে জানান।
সার্বিক বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন সনজিব সরকার বলেন, ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার মালিক আমি নয়, এই মুহুর্তে দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ১০ হাজার ডাক্তার সংকট রয়েছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিচালক স্বাস্থ্য এমনকি মহা-পরিচালক পর্যন্ত অবগত করেছি। তারা বলেছেন, আগামিতে (সামনে)ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হবে। এরপর এই সমস্যা আর থাকবে না।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ১০ ডাক্তারের মধ্যে ৭ জনই অনুপস্থিত
জানুয়ারি ২৭
০৩:৩১
২০১৯