
স্টাফ রিপোর্টার : দুপুর আনুমানিক দুইটা। নগরীর ব্যস্ততম সড়রেক ধার দিয়ে এক যুবক সজাগ দৃষ্টিতে ছুটে চলেছে সামনের দিকে। কাঁধে কাপড়ে বাঁধা একটি বড় বাক্স। আর এক হাতে চার কোনা মাঝারি আকারের কাঁচের ফ্রেমের বাক্সে ভর্তি রঙ্গিন সব অলঙ্কার। বাক্স ভর্তি সেই সরঞ্জামের ভারে সামনে হেলে গিয়েছে তার শরীর। কিছু সময় পর পর চলন্ত অবস্থায় সে হাক পাড়ছে ‘লেইস-ফিতা-লেইস; চুড়ি ফিতা, রঙ্গিন ফিতা, রঙ্গিন করিবে মন’।
কিছুদুর এগিয়ে যেতেই চায়ের দোকান দেখে সেখানে বসে পড়লো সেই ব্যস্ত যুবক। কথা বলে জানাগেল তার নাম মো: সুমন। বাড়ি নগরীর সিরোইল কলোনী এলাকায়। তার কাঁধের সেই বাক্সের ওজন সম্পর্কে জানতে চাইলে ১৫ থেকে ১৬ কেজি হবে বলে জানায়। প্রতিদিন সে এভাবেই এই বোঝা নিয়ে দূর দুরান্তের পথ পারি দিয়ে ফেরি করে ফেরে লেইস-ফিতা, চুড়ি-বালা, কানের দুল, নাকের ফুল, আলতাসহ নারীদের পছন্দের প্রায় সব ধরণের প্রসাধনী। তার ক্রেতাদের অনেকেই তাকে লেইস-ফিতা ওয়ালা, আবার কেউ ফেরি ওয়ালা হিসেবেই চেনে।
সুমন দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর থেকে নগরীতে ফেরি করে এসব সৌখিন ও সাজসজ্জান সামগ্রী বিক্রি করে ফিরছে। কাঁধে বোঝা নিয়ে সারাদিন তাকে এ এলাকা থেকে ও এলাকায় ছুটে বেড়াতে হয়। একেক দিন একেক এলাকায় সে ছুটে বেড়ায়। সারা দিনের প্রচুর পরিশ্রম ও কথা খরচ করে যে আয় হয় তাদিয়েই চলে সুমনের সংসার।
সুমন জানায়, একটা সময় ছিল যখন পাড়া-মহল্লার মে-বৌয়েরা সারা সপ্তাহ অপেক্ষায় থাকতো কখন লেইস-ফিতা ওয়ালা বা ফেরিওয়ালা আসবে। তবে পরিশ্রমের তুলনায় আয় কম হওয়ায় এখন পুরাতনদের অনেকেই এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর নতুন প্রজন্মের কেউ এ পেশা বেছে নিচ্ছে না। সে আরও জানায়, এখন বাজারের পাশাপাশি প্রতিটি পাড়া মহল্লায় এধরণের সামগ্রী দোকান গড়ে উঠেছে, ফলে বাসা-বাড়ির মেয়েরা এখন ফেরিওয়ালাদের ওপর নির্ভর হয়ে থাকে না। তারা সরাসরি এখন দোকানেই যায় তাদের সেই পছন্দের মাল কিনতে।