সর্বশেষ সংবাদ :

কুয়াকাটা সৈকতের গাছগুলোতে আগুন দিচ্ছে কারা?

ঢাকা অফিসঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের গঙ্গামতি পয়েন্ট এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটি বড় অংশজুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মারা যাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎ অনেক গাছে পোড়া দাগ দেখা যাচ্ছে। কে বা কারা গাছগুলো পুড়িয়েছে তা কেউ জানেন না। এ বিষয়ে বনবিভাগের কাছেও কোনো তথ্য নেই।

একদিকে এত পরিমাণ গাছের মৃত্যুতে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে উপকূলে দুর্যোগ ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করেন পরিবেশ কর্মীরা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কলাপাড়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, “গাছ মৃত্যুর দায় বনবিভাগ এড়িয়ে যেতে পারে না। কারণ সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বনবিভাগের।”

“আর আগুন দিয়ে গাছ পোড়ানোর অর্থ হলো অবশ্যই তার পাশে থাকা তাজা গাছগুলোরও ক্ষতি করা। এটা আমাদের পরিবেশের জন্য বড় ধরনের হুমকি।”

এই পরিবেশবিদ আরও বলেন, “বনবিভাগের উচিত শিগগিরই যেসব দুষ্কৃতিকারী বন উজাড়ের চেষ্টা করছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা।”

গঙ্গামতি সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে সংবাদকর্মীরা দেখেছেন, মৃত গাছগুলো পুড়ে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোর পুড়ে যাওয়া গোড়া পড়ে আছে, আবার কিছু গাছ আধপোড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।

কুয়াকাটা সৈকতের গঙ্গামতি পয়েন্টে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছে কে বা কারা আগুন দিয়েছে ঢাকা ট্রিবিউন
গঙ্গামতি এলাকার বয়োঃজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা রহমান হাওলাদার বলেন, “এক সময় মানুষ বন থেকে গাছ চুরি করে নিতো, কিন্তু এখন আর সেরকম কিছু হয় না। কয়েক বছর ধরে জঙ্গলের গাছগুলো শঙ্কাজনক হারে মারা যাচ্ছে। বড় গাছগুলো অনেকদিন আগে মরে যাওয়ায় ভেঙে ও পচে যাচ্ছে। তাই এলাকার জেলেরা মাঝে মাঝে সেই পড়ে থাকা গাছগুলো নিয়ে গিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। তবে এই গাছগুলো কারা পুড়িয়ে মেরেছে তা আমরা জানি না। কাউকে কখনো আগুন দিতে দেখিনি।”

বনবিভাগের তথ্যমতে, বছরে লেম্বুরবন, গঙ্গামতি ও কুয়াকাটা এলাকার প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে ঝাউ, কেওড়া, বাইন, ইউক্লিপটাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির বনায়ন করা হয়। তাদের দাবি কিছু ঝাউগাছ ব্যতীত অনেক গাছই বিভিন্ন ঝড়ে বিলীন হয়ে গেছে।

বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “মৃত গাছগুলো কীভাবে পুড়েছে তা আমাদের জানা নেই। পোড়া গাছগুলো নজরে আসার পর আমরা চেষ্টা করছি এর কারণ বের করার।”

তিনি আরও বলেন, “গাছগুলো অনেকদিন আগে মরে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছিল। তাই হয়তো সমুদ্রগামী জেলেরা শীতে সময়ে আগুন পোহাতে মরা গাছে আগুন জ্বালাতে পারেন।”


প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২২ | সময়: ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ