সর্বশেষ সংবাদ :

রাঙ্গামাটিতে মাদক পরিস্থিতির পর্যালোচনা সভা

১১মাসে চার কোটি উনসত্তর লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পঞ্চাশ টাকার আলামত উদ্ধার

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটিতে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রচারণা কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে মাদক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায়
১১মাসে আনুমানিক বাজার মূল্য চার কোটি উনসত্তর লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পঞ্চাশ টাকার আলামত উদ্ধার করা হয়েছে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাঙ্গামাটি জেলার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ।

বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলাপ্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মাদক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলাপ্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল, পিএএ (অতিরিক্ত সচিব)।

মহাপরিচালক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সহযোগিতা ছাড়া সব কাজ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর করতে পারে না। দেশে যে হারে মাদক সেবনে আসক্তি, মাদক পাচার করা হচ্ছে মাঝে মধ্যে বইয়ের ভিতর পর্যন্ত মাদক পাচার করে থাকে তা আমরা তাদেরকে ধরতে কঠিন হয়ে পড়। রাঙ্গামাটিতে মাদক নির্মূল কম হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমিন, নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলি রহমান তিন্নী, লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মইনুল আবেদীন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান, জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জীতেন্দ্র কুমার নাথ, বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান, কাউখালি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন আরা সুলতানা, রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আজাদ ছাল্লাল, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাদিম সারওয়ার, রাঙ্গামাটি পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ তাছাদ্দিক হোসেন কবীর, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম সহ বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বাস মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, নৌপথ ও স্থলপথ রাঙ্গামটির দুই স্থানে মাদক পাচার আগের থেকে অনেক কমে গেছে। তবে শহরের বাস ও ট্রাক টার্মিনালে রাত্রে মাদক সেবন করে ও আড্ডা দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন করে চিহ্নিত জায়গাগুলো  উপস্থাপন করেন অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, রাত ১১টা পর্যন্ত আমার কলেজ ক্যাম্পাসে কিছু ছেলে মোটরসাইকেল নিয়ে আড্ডা দিতে যায় সেটা কি কারণে যাই তা আমি জানিনা হয়তো তারা খারাপ উদ্দেশ্যে যায় অথবা মাদক সেবন করতে যায়। এসময় তিনি গোয়েন্দা সংস্থা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা চান।

রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বরকলের ছোট হরিণা থেকে রাঙ্গামাটিতে জ্বালানী তেলযুক্ত ফেনসিডিল, ইয়াবা এরকম পাচার করা হচ্ছে এমন তথ্য একাধিক লোকজন আমাদেরকে জানিয়েছেন। রাঙ্গামাটির বিজিবি সেক্টর কমান্ডারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

রাঙ্গামাটি জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংস্থার পরিসংখ্যানের তথ্য মতে, ১লা জানুয়ারি হতে ৩০ নভেম্বর/২১ মোট ১১মাসে উদ্ধারকৃত আলামতের আনুমানিক বাজার মূল্য চার কোটি উনসত্তর লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পঞ্চাশ। উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে ইয়াবা ৮১৪০ পিস, গাঁজা ১৬ কেজি, চোলাইমদ ৩২০৩ লিটার, ওয়াশ ১৫,২১০ কেজি, মুলি ৩৮ কেজি, কোকেন ৯৭০ গ্রাম, ট্রলার ২ টি, সিএনজি ০১ টি। এছাড়া অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ২০৮০ টি, মামলা করা হয়েছে ২০৯ টি এবং ২৫৮ জন আসামী আটক করা হয়েছে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২১ | সময়: ১০:২৪ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর