সর্বশেষ সংবাদ :

বয়স্ক আশ্রয়হীন এক ভিক্ষুকের দায়িত্ব নিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার

নুরুজ্জামান,বাঘা : ভিক্ষাবৃত্তি মানবতার চরম অবমাননা । স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে এটা কারো কাম্য নয়। এটি ব্যক্তি , পরিবার , সমাজ ও দেশের সম্মান নষ্ট করে। তার পরেও দারিদ্র্যের কষাঘাতে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে কিছু মানুষ ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়।

তাদেরই একজন বাঘা উপজেলার আমোদপুর গ্রামের বিধবা নারী রাবিয়া। তাকে একটি ঘর করে দেয়া সহ জীবন-জীবিকার দায়িত্ব নিয়েছেন মানবতার সেবক ও বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান । তাঁর একটিই ভাবনা, কৃষিকে সমৃদ্ধশালী করতে হবে। এ জন্য কৃষকদের নানা পরামর্শ ও প্রনদনা সহায়তা দেয়া সহ নিরলস পরিশ্রমও করছেন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঘা উপজেলার আমোদপুর গ্রামের প্রায়াত আলী মুদ্দিন এর স্ত্রী ভূমিহীন রাবিয়া বেগম(৬০) আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ভিক্ষা করে জীবিকা নিরবাহ করে আসছেন। তার মাথা গুজার ঠাই নেই। একমাত্র নাতি লালন উদ্দিনের বারান্দায় ঘুমান। তাকে নিজে রান্না করে খেতে হয়। আবার কখনো-কখনো নাতি বৌ রান্না করে দেন । আয়ের উৎস বলতে বয়স্ক ভাতার সামান্য কিছু টাকা।

বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিমের মাধ্যমে বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতানের নজরে আসলে রবিবার দুপুরে তিনি রাবিয়ার সাথে দেখা করতে যান । এরপর তার নাতি লালন উদ্দিনের সাথে কথা বলে তার ঘরের পেছনে সামান্য একটু জায়গা নিয়ে একটি ঘর তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করেন । একই সাথে তাঁর নাতিকে প্রতি মাসে তাঁর নানির খাবার এবং প্রয়োজনীয় সকল খরচ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার নাফিজ শরিফ ও আনছার ভিডিপি কর্মকর্তা শ্রী মিলন কুমার দাস। এ খবর শুনে উপজেলা কৃষি অফিসারের প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আমোদপুর গ্রামবাসী।

এদিকে কৃষি অফিসারের এই মহানুভতায় আশার আলো দেখতে পান রাবিয়া। তিনি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সমস্যা নিরসনে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠেন। অত:পর কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান এর জন্য সৃষ্টি কর্তার কাছে দোয়া পার্থনা করে ওয়াদা করেন, আগামী দিন গুলোতে তিনি আর ভিক্ষাবৃত্তি করবেন না।

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, মানব সেবা হলো সবচেয়ে বড় সেবা । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নত বাংলাদেশ গঠনের যে কর্ম উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন মানুষ আশ্রয়হীন এবং না খেয়ে থাকবে না। এ জন্য ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান ও প~ন©বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমি তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে একজন ভিক্ষুকের দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র ।

ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। আমাদের সমাজে অনেক বৃত্তবান মানুষ রয়েছে। যদি শফিউল্লাহ সুলতানের মতো গরিব-দুখিদের পাশে এসে সবাই এমনটি সাহায্যের হাত বাড়াতেন, তাহলে এই সামাজে অসচ্ছল মানুষ গুলোর দু:খ দুর্দশা লাঘব হতো।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২ | সময়: ৩:০০ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ