বেগম রোকেয়া দিবসে রাঙ্গামাটিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেলেন ৫ নারী

রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:” নারী নির্যাতন বন্ধ করি কমল রঙের বিশ্ব গড়ি ” এই প্রতিপাদ্যে রাঙ্গামাটিতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ৫ নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত  হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মামুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শিল্পী রাণী রায়, জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক নুরুল আবসার, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হোসনেয়ারা বেগম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নিতিশ চাকমা প্রমূখ।

নারীদের অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন, শিক্ষা ও চাকুরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন, সফল জননী হিসেবে সাফল্য অর্জন, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা ও নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা ৫ জনকে প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে বেগম রোকেয়াকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বক্তারা বলেন, লেখাপড়া প্রসার ঘটানোর পর নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই শিক্ষাসহ সবকিছুতে এগিয়ে আছি। আর শুধু নারীরা এগিয়ে গেলে হবে না পাশাপাশি পুরুষেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীও একজন নারী নেত্রী। আমরা অনেক নারী স্কুল কলেজ যা কিছু বলি না কেন মাঠে-ঘাটেও আছি, খেলাধূলায়ও আছি, সেনাবাহিনী-বিমানবাহিনী সহ সব জায়গাতে নারীরা আছি। জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে নারীদের মর্যাদার অবদান রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় মুসলিম সমাজে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর কোনো নিয়ম ছিল না। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও পরিবারের সবার অগোচরে তার বড় ভাইয়ের কাছে উর্দূ, বাংলা, আরবী ও ফারসি পড়তে এবং লিখতে শেখেন। তার জীবনে শিক্ষালাভ ও মূল্যবোধ গঠনে তার ভাই ও বড় বোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। পরবর্তীতে বিহারের ভাগলপুরে সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়। স্বামীর উৎসাহে ও নিজের আগ্রহে তিনি লেখাপড়ার প্রসার ঘটান। বেগম রোকেয়া ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বরে মারা যান। বেগম রোকেয়া ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হলো-মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অবরোধ-বাসিনী। এই দিবসটি প্রতিবছর সরকারিভাবে জাতীয় দিবস পালিত হয়।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২১ | সময়: ৪:২১ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ